UsharAlo logo
শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামের ভয়ংকর সেই রাত

pial
জুন ৭, ২০২২ ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেক্স : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকার লোকজন অন্যান্য দিনের মতোই সেদিনও রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল । ঘড়ির কাঁটা ঠিক ১১ টা ছুঁই ছুঁই। এমন সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে বিএম কনটেইনার ডিপোতে। বিস্ফোরণে কয়েক কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। এরপর পুরো এলাকায় শুরু হয় দগ্ধ মানুষের ছোটাছুটি। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে বিস্তৃত এলাকার পরিবেশ। ভয়ংকর সে রাতের কথা উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে, যাকে তুলনা করা হয়েছে কেয়ামতের সাথে।

ওই এলাকার বাসিন্দা ৫৮ বছর বয়সী মতিউর রহমান বলছিলেন, ‘আমার এ জীবনে এমন বিভীষিকাময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কখনো হইনি। বিস্ফোরণের পর কয়েক শ মিটার দূরে গিয়ে পড়ে লোকজনের হাত, পা, মাথার মগজ। এমনকি ৪০-৫০ কেজি ওজনের কনটেইনারের ভাঙা অংশ এসে পড়ে লোকজনের ঘরের ওপর। মনে পড়লে এখনো গা শিউরে ওঠে। ওই দৃশ্যগুলো আমার মাথা থেকে কোনোভাবেই সরাতে পারছি না।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কেশবপুর এলাকার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘রাতের ভাত খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় বিকট শব্দে পুরো এলাকা কম্পিত হয়। প্রচণ্ড শব্দে ভেঙে যায় ঘরের দরজা-জানালা। তখন আতঙ্কে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাই।’

কামাল কন্ট্রাক্টর বাড়ির মো. সেলিম বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর ঘর থেকে বের হয়ে দেখি দগ্ধ মানুষের আহাজারি। দগ্ধদের সবার শরীর সাদা আবরণে ঢেকে গেছে। অনেকের হাত, পা নেই। এরপরও তারা জীবন বাঁচাতে ছুটছে আর ছুটছে। কী ভয়ংকর পরিবেশ ছিল তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এই ধরনের প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন আর হতে চাই না।’

বিএম কনটেইনার ডিপোর সিএফএস সুপারভাইজার এমরান হোসেন জানান, ‘রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ডিপোর সতর্ক অ্যালার্ম বেজে ওঠে। মনে করেছি অন্য দিনের মতো স্বাভাবিক কিছু। তবে রাত ১১ টার পর থেকে একের পর এক বিস্ফোরণ হচ্ছিল। আর এ সময় কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জামই কাজে আসছিল না। প্রলয়ঙ্করী রাত কেটেছে আমাদের। এমন দৃশ্য জীবনে কখনো দেখিনি।’

(ঊষার আলো-এসএইস)