UsharAlo logo
শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজ, ফয়সালের বছরে আয় ১৩ লাখ

usharalodesk
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট: বাগেরহাটের মোল্লাহাটে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছেন শেখ ফয়সাল আহম্মেদ (৩২) নামে এক তরুণ উদ্যোক্তা। উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মধুমতি নদীর দুই পাড়ে গাড়ফা ও চর উদয়পুর গ্রামে প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। মধুমতি এগ্রো নামে খামারটিতে রয়েছে সাম্মাম, বাসন্তি বেগুন, ব্ল্যাক বেবি বারোমাসি তরমুজ, টপলেডি পেঁপে, ফিলিপাইনের কালো আখসহ নানা জাতের বিদেশি ফলের গাছ। প্রকৌশলীর চাকরি ছেড়ে আসা ফয়সালের এক বছরে আয় হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা।

তরুণ উদ্যোক্তা ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, খুলনা পলিটেকনিক থেকে ২০১০ সালে মেকানিক্যাল ট্রেডে ডিপ্লোমা পাস করে বেসরকারি চাকরিতে যোগ দিই। পারিবারিকভাবেই কৃষির প্রতি আগ্রহ ছোটবেলা থেকে। পরে চাকরি ভালো না লাগায় করোনার মধ্যে ছেড়ে বাড়ি চলে আসি। গড়ে তুলি মধুমতি এগ্রো নামে কৃষি খামার। প্রথমে মাত্র ৫০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ৪৫ শতক জমিতে কৃষিকাজ শুরু করি। বর্তমানে ১৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করছি। আমার এখানে বর্তমানে ১২ জন নারী-পুরুষ কাজ করছেন।

ফয়সাল আরও বলেন, এই মুহূর্তে খামারে গাছ রয়েছে সাম্মাম ১০ হাজার, বাসন্তি বেগুন ৬০০, টমেটো (বাহুবলি এবং জিরো টু সেভেন) ৭ হাজার, টপলেডি পেঁপে ১০০, ব্ল্যাক বেবি তরমুজ দেড় হাজার এবং ফিলিপাইনের কালো আখ ৩ হাজার।

তিনি বলেন, বর্তমানে দুই একর জমিতে সাম্মাম চাষ হচ্ছে। সাম্মাম রোপণ থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত ৭৫ দিন সময় লাগে। এক জমিতে বছরে তিনবার সাম্মাম চাষ করা যায়। প্রতিবার চাষে সার, বীজ, মাচানসহ প্রথম বার একর প্রতি দুই লাখ টাকা খরচ হয়, পরের বার অর্ধেক খরচেই চাষাবাদ করা যায়।

পাশাপাশি অন্যান্য ফলের চাষাবাদ, উৎপাদন, প্যাকেজিং, পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক ৫ লাখ টাকা ব্যয় হয় বছরে। তবে একর প্রতি সাম্মাম উৎপাদন হয় ১০ টন। এছাড়া ১২ জন শ্রমিকের পেছনে বছরে অন্তত ১২ লাখ টাকা ব্যয় হয়। সব মিলিয়ে বছরে খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় ২০ লাখ টাকা। সব খরচ মিটিয়ে আয় হয় প্রায় ১৩ লাখ টাকা।

ক্ষেতে নিয়মিত কাজ করা শেফালি পোদ্দার নামে এক কর্মী বলেন, প্রথম থেকেই আমি এই খামারে কাজ করি। প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করি। এই আয় দিয়েই আমার পরিবার চলে।

ফয়সাল আহমেদের বাবা শেখ টিপু সুলতান বলেন, চাকরি থেকে মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেতন পেত ছেলে। হঠাৎ এক দিন বলে চাকরি ছেড়ে দেবে। কৃষিকাজ করবে। প্রথমে রাজি না হলেও ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে মেনে নিয়েছি। এখন আমরা বাবা-ছেলে একসঙ্গে ক্ষেতের দেখাশোনা করি।

মোল্লাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিমেষ বালা বলেন, ফয়সাল আহমেদ বাগেরহাটে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মরু অঞ্চলের ফল সাম্মাম চাষাবাদ করেছে। ফলটিকে অনেকে রকমেলন বা হানিডিউ মেলনও বলে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছি।

ঊষার আলো-এসএ