কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গভীর রাতে জানালার গ্রীল কেটে বাড়িতে ঢুকে সকলের হাত-বেঁধে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যদের চিনে ফেলায় বাড়িওয়ালার ছেলেকে মারধোর ও শ্বাসরোধে হত্যার পর টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে সশস্ত্র ডাকাত দল।
(৪ নভেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর গ্রামের সুপারী ব্যবসায়ী শফি উদ্দিনের বাড়িতে এ দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এ দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও যুবককে হত্যার ঘটনায় ওই পরিবারসহ ও এলাকাবাস্যার মধ্যে একদিকে শোক অন্যদিকে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ডাকাত দলের হাতে নিহত ব্যক্তির নাম আলেফ উদ্দিন (৩৫)। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান ও ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.সানোয়ার হোসেনসহ পুলিশের একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গুরুত্বসহ তদন্ত করছেন বলে জানান ওসি সানোয়ার হোসেন।
ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ ও বাড়ির মালিক শফি উদ্দিন জানায়, আনুমানিক রাত দুইটার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের মুখোশ পড়া সশস্ত্র ডাকাত রান্না ঘরের জানালার গ্রীল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করে।
বাড়িতে ঢুকেই তারা শফি উদ্দিন, তার স্ত্রী হাসিনা বেগম, ছেলে আলেফ উদ্দিন, আনিছুর রহমান এবং ছেলের বউ সুমাইয়া বেগমসহ সকলের হাত পা মুখ বেঁধে মারধর করতে করতে টাকা ও স্বর্ণালংকার কোথায় আছে দেখিয়ে দিতে বলে।
এক পর্যায়ে তারা ড্রয়ারে থাকা রাখা ১০/১২ হাজার টাকা, পাঁচ-ছয় ভরি স্বর্ণালংকার এবং মহিলাদের শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার আরও দুই- তিন ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়।
বাড়ি ওয়ালার ছেলে আলেফ উদ্দিন ডাকাত দলের সদস্যদের চিনে ফেলায় তাকে বেদম মারপিট করে মুখে কাপড় গুজে দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।
শফি উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, তারা টাকা ও স্বর্ণালংকার নেয়ার পরও আমার চোখের সামনে আমার ছেলেকে মারধর করে নাক-মুখ-গলা চেপে ধরে হত্যা করে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ আমার ছেলের হত্যাকারিদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সানোয়ার হোসেন জানান,আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ডাকাতির ঘটনায় নিহত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো এবং থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মো: মাহফুজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ডাকাত দল রান্না ঘরের জানালার গ্রীল কেটে বাড়িতে প্রবেশ করেছে।
বাড়ির মালিকের ছেলে আলেফ উদ্দিন হয়তো ডাকাতদের চিনতে পেরেছে। সে কারণে ডাকাতরা তাকে মেরে ফেলতে পারে। পুলিশ অনুসন্ধান করে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলকে গ্রেপ্তারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।