UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমে উঠেছে ঈদ বাজার

ঊষার আলো রিপোর্ট
মার্চ ২৩, ২০২৫ ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আর মাত্র কয়েক দিন বাকি ঈদের। এরই মধ্যে চলছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের কেনাকাটায় ছোট-বড়, ধনী-গরিব কেউ পিছিনে নেই। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা ছুটছেন ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় মার্কেট ও বিপণি-বিতানগুলোতে। এতে করে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে জমে উঠেছে রাজধানীসহ সারা দেশের ঈদ বাজার। আর এ সুযোগে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী নিম্নমানের কাপড়সহ তৈরি পোশাক ও ভারতীয় পোশাক বেশি দামে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন অতিরিক্ত মুনাফা।

শনিবার ( ২২ মার্চ) সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর ফুটপাত থেকে অভিজাত শপিংমল পর্যন্ত সবখানে চলছে কেনাকাটা। প্রতিটি মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে বিক্রেতারা। যেন নিশ্বাস ফেলার সময় পাচ্ছে না তারা।

রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, গুলিস্তান, নিউমার্কেট, মিরপুর-১ সহ বিভিন্ন মার্কেট।

এছাড়াও মার্কেট ও স্টেশন বাজারে প্রতিদিনি হাজার হাজার মানুষের ভিড় লেগেই আছে। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষ কেনাকাটার জন্য এসব মার্কেটকে বেছে নিচ্ছেন। আর যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের জন্য ফুটপাতই ভরসা। এর ফলে বিক্রির কমতি নেই ফুটপাতেও।

নগরীর বেশ কয়েকজন পোশাক বিক্রেতারা জানান, ‘সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রচুর লোকের সমাগম হচ্ছে মার্কেটগুলোতে। ক্রেতারা নিজের পছন্দ অনুযায়ী শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট ও প্যান্ট, জুতা, স্যান্ডেল, পাঞ্জাবিসহ অন্যান্য জিনিস কিনছেন।’

পোশাক বিক্রেতারা জানিয়েছেন, জামদানি ৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা, মেয়েদের পাগলু, বিপাশা বসু, জান্নাত-টু, আশিকী-২, জিপসি ৩৫০ থেকে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা, ছেলেদের কার্গো জিন্স, থাই, ডিসকার্ড-২, সিম ফিট, ফরমাল টি শার্ট ৭৫০ থেকে ৩ হাজার ৪শ টাকা, ছোটদের লেহেঙ্গা, মাসাক্কালী, সিঙ্গেল টপ, টপসেট, গেঞ্জিসেট ১ হাজার ২০০ থেকে ৭ হাজার টাকা, পাঞ্জাবির মধ্যে বড়দের ছোটদের ধুতি কাতান ৩৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার এবং আকর্ষণীয় শেরওয়ানি ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে বাজারে এসেছে ছেলেদের বাহুবলী, বজরঙ্গি ভাইজান ও রইস পাঞ্জা্বি। এদিকে ক্রেতারা জানান, কাপড়ের দাম বেশি ।

বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে কাপড় কিনতে আসা এক নারী শামিমা আক্তার বলেন, গত বছর ঈদের আগে যে পোশাক ১০ হাজার টাকায় কিনেছি, এবার সেই একই মানের পোশাকের দাম একটু বাড়িয়ে বিক্রয় হচ্ছে। কোনো কোনো কাপড়ের ক্ষেত্রে আবার দ্বিগুণ দাম ধরা হচ্ছে।

আরেক ক্রেতা জানান বলেন, বছর ঘুরে আবার সামনে আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ভাগ করে নিতে আগেভাগেই পরিবার, কাজের লোকসহ সবার জন্য নতুন কাপড় কিনতে এসেছি। যাতে সবার সঙ্গে ঈদ ভালো কাটে। ব্যবসায়ীরা বেশি দাম চাচ্ছেন। কিন্তু ঈদে পোশাক তো কিনতেই হবে। তাই আমার সাধ্যের মধ্যে যা ভালো লেগেছে তাই কিনছি।

ক্রেতা সাথী বলেন, ঈদে নতুন পোশাক না হলে বেমানান লাগে। তাই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বাবা-মায়ের জন্য নতুন কাপড় কিনতে এসেছি। বাবা-মার জন্য ভালো পোশাকটাই কিনব। দাম বেশি হলেও কিনব।

ঝিনাইদহ থেকে আমাদের সংবাদদাতা জানান, জেলা শহরের বিপণী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বিকাল হলেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। আবহাওয়া ভালো থাকায় বিপনি বিতান ও দোকানগুলোতে ক্রমশ ক্রেতা সমাগম বাড়ছে। সমবায় সুপার মার্কেট, মুন্সি মার্কেট, জিন্না সুপার মার্কেটসহ জেলা ও উপজেলা শহরের বিপনি বিতানগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় দোকানিদের।

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শরীয়তপুরের ঐতিহ্যবাহী বাজার ডামুড্যায় জমে উঠছে ঈদের বাজার। মার্কেট গুলোতে মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মত। ঈদে পছন্দের পোষাকটি কিনতে ক্রেতারা ছুটছে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে। আর তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিক্রেতারাও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পোশাকে সাজিয়েছেন দোকান।

শনিবার বিকালে ডামুড্যা মুন্সী মার্কেট গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ক্রেতা থেকে মহিলা ক্রেতা বেশি এসময় দেখা যায় মহিলাদের ভীর সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে মার্কেটের বিক্রেতার।

বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরই মাঝে সাধ ও সাধ্যের মধ্য থেকে ঈদ বাজারে কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতারা। ঈদ কেনাকাটায় শুধু কাপড়ের দোকানে নয় ভীড় হচ্ছে জুতা, কসমেটিক্স প্রসাধনীসহ অন্যান্য দোকান গুলোতেও। ঈদের কেনাকাটায় মার্কেট গুলোতে প্রায় সব ধরনের পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি-পায়জামা, ট্রাউজার, বাচ্চাদের পোশাক, শাড়ি, শার্ট পিস, প্যান্ট পিস, থ্রি-পিস, বেল্ট, জুতা, গেঞ্জি, লুঙ্গি ইত্যাদি। তবে এই মূহুর্তে ক্রেতাদের আকর্ষণ এবং আগ্রহ বেশি বাচ্চাদের পোষাকের দিকে।

শনিবার রাজশাহীর সাহেব বাজারের কাপড়ের দোকানগুলোতে কেনা-কাটায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে শিশু ও অভিভাবকদের। তবে অভিভাবকদের দাবি, দোকানগুলোতে শিশুদের পোশাকের বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে। তবে ভিন্ন কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন- দাম মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। তবে বাজারে ক্রেতা একটু কম।

এদিকে  রঙ-বেরঙের পোশাকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে মহানগরীর দোকানগুলো। ঈদকে রঙিন করে তুলতে বিপণীবিতানগুলোতে শিশুদের জন্য বাহারি পোশাকে সাজানো হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে এবার শিশুদের পোশাকেও এসেছে বৈচিত্র্য। দোকানগুলোতে মেয়ে শিশুদের জন্য লং ফ্রক, কটন ফ্রক, ডিভাইডার শর্ট স্কার্টের কদর বেশি। আর ছেলে শিশুদের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট, গেঞ্জি সেট, থ্রি কোয়ার্টার, শর্ট-প্যান্ট, ফুল প্যান্টসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক নিয়ে  প্রস্তুত দোকানিরা।

ঊষার আলো-এসএ