শ্যামনগর(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ‘একটি বাড়ি-একটি খামার’প্রকল্পের আদলে উপকূলে ‘একটি বাড়ি-একটি শেল্টার হোম’প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে উপকূলীয় জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সুপার সাইক্লোন সিডর, আইলা ও আম্ফানের মতো দুর্যোগ সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় নতুন আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি উপকূলের সকল বাড়িকে আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর ২০২২) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেসরাকরী সংস্থা ‘লিডার্স’এবং নাগরিক সংগঠন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র-এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশের প্রতিনিধি মো. নূর আলম শেখ, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, ইমক্যাব নেতা আমিনুল হক ভূইয়া, লিডার্সের কর্মসূচী ব্যবস্থাপক মো. ইকবাল ফারুক, ফেইথ ইন একশনের কর্মসূচী সমন্বয়কারী তীমন বাড়ই, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস)’র এস এম মামুন, শহীদ আলীম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক সানজিদুল হাসান প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবণাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, প্রভৃতির কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
ওই অঞ্চলের মানুষ বাঁচার স্বপ্ন হারিয়ে ফেলছে। ওদেরকে সেই স্বপ্ন ফিরিয়ে দিতে হবে। ওই এলাকাকে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তারা আরো বলেন, উপকূলের ঘরবাড়িগুলো দুর্যোগ সহনশীল করে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে সেই প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্যোগ সহনশীল মজবুত ঘর নির্মাণে সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে।
উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রক্রিয়া বাড়াতে হবে। আগামীতে সরকারের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দূর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধান করতে হবে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পসহ সুন্দরবন উপকূলে নেওয়া সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা।
(ঊষার আলো-এফএসপি)