UsharAlo logo
রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টেন্ডার পেতে মরিয়া বিএনপি নেতাকর্মিদের হাতে খুলনার সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ৩ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

কে এইচ এম
মার্চ ৪, ২০২৫ ৭:৫৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগের ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিতে খুলনার সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে তান্ডব চালিয়ে কর্মকর্তাদের মারধর ও লাঞ্ছিত করেছে স্থানীয় বিএনপি’র কয়েকজন নেতাকর্মি।

তাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারসহ তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী। চেয়ার তুলে আছাড় মারায় ফেটে গেছে মেঝের টাইলস, ঘুষি মারায় ডেবে গেছে টেবিল। হামলাকারীরা সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপি ও যুবদলের শীর্ষস্থানীয় নেতা। রোববার দুপুরে ঘটনা ঘটলেও বাইরে জানাজানি হয় রাতে। সোমবার সকালে অফিসে গিয়ে দেখা গেছে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, নগরীর সোনাডাঙ্গার ২১৮, এম এ বারী সড়কে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির অবস্থান। সম্প্রতি কোম্পানিতে ১৪৮ জন আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী ৪ মার্চ পর্যন্ত সিডিউল বিক্রি হবে। ৫ তারিখ দুপুর ১২টা পর্যন্ত জমা এবং সাড়ে ১২টায় টেন্ডার ওপেন করা হবে। খুলনার সোনাডাঙ্গাস্থ অফিস এবং ঢাকার কারওয়ান বাজারস্থ পেট্রোসেন্টার থেকে সিডিউল বিক্রি হলেও জমা নেওয়া হবে শুধুমাত্র খুলনায়। সিডিউলের দাম নির্ধারণ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। টেন্ডারে অংশগ্রহণকারীকে সিকিউরিটি হিসেবে জমা দিতে হবে ১৮ লাখ টাকা। টেন্ডার আহবান করেছেন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (অ্যাডমিন) শাহ আলম মোল্লা।


কোম্পানির নিরাপত্তা কর্মী শিবপদ মিস্ত্রি জানান, রোববার দুপুরে জিএম স্যারের সাথে দেখা করার জন্য চারজন লোক আসেন। দুপুর ১২টা ২৯ মিনিটের সময় ভিজিটর রেজিস্ট্রি বইয়ে মো: নজরুল নামে একজন স্বাক্ষর করে সবাই ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপরই ভেতর থেকে হইহট্টগোলের শব্দ পাই। তবে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। পরে অন্য স্যাররা গিয়ে ওদের সাথে কথা বলেন। দুপুর সোয়া ১টার দিকে তারা বেরিয়ে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোম্পানির একাধিক কর্মী জানান, বহিরাগত ৪ জনের মধ্যে সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, ১৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বকসি ও যুবদলের নজরুলসহ তিন নেতা ছিলেন। তারা জিএম’র রুমে প্রবেশ করে আগে থেকে অবস্থান করা অফিস সহকারী মেহেদী হাসানকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। ভেতর থেকে দরজা আটকে দিলে বাইরে থেকে হইচই, চিৎকার, গালিগালাজ ও ভাংচুরের আওয়াজ পাওয়া যায়। এ সময় অন্যান্য কর্মকর্তারা ছুটে এসে দরজা খোলার অনুরোধ করলে এক পর্যায়ে তা খুলে দেয়। স্যারকে রক্ষা করতে জেনারেল সেকশনের ম্যানেজার মো: মেহেদী হাসান রুমে ঢুকলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে সোফার ওপর ফেলে দেয় এবং মারধর করে।
সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম মোল্লা বলেন, টেন্ডার আহবান করার পর অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও আমার কাছে কয়েকবার ফোন দেন। আমি তাকে বলি, আপনি চাহিদা অনুযায়ী সকল কাগজপত্র জমা দিলে ও যথাযথভাবে অংশ নিলে কাজ পাবেন। কিন্ত তিনি কাজের জন্য আমার ওপর চাপ দিচ্ছিলেন। রোববার দুপুরে অফিসে এসে আমি কেন তার ফোন ধরছিনা- এই অভিযোগ এনে কিছুটা রূঢ় আচরণ করেছিলেন। পরে অবশ্য ভুল বুঝতে পেরে স্যরি বলে চলে গেছেন।

মারধর করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি লজ্জাবোধ করে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং মৌন থাকেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, টেন্ডারে অংশ নেওয়ার জন্য খোঁজ খবর নিতে উনার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন না ধরে অসহযোগিতা করেছেন। ফোন না ধরা অভদ্রতা এটা বুঝাতে ও উনার সাথে চেনা পরিচয় হতে গিয়েছিলাম। সেখানে অপ্রীতিকর কিছুই ঘটেনি।

ঊআ-কেএইএম