সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : লিয়াকতের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. এম শাহ আলমের ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন না’মঞ্জুর করে জামিন আবদেন মঞ্জুর করা হয়েছে। উভয়পক্ষের শুনানী শেষে সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর বুধবার (১৯ মে) দুপুর দেড়টার দিকে এ আদেশ দিলে বিকেল চারটায় তিনি জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে জামিন শুনানীতে অংশ নেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আইন ও শালিস কেন্দ্রের আইনি পরামর্শক অ্যাড. এন আই জেড পান্না। সাতক্ষীরা থেকে অংশ নেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড আবুল হোসেন (২), সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহ, অ্যাড. আশরাফুল আলম, অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোসলেমউদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. সত্যরঞ্জন মণ্ডল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাড. গোলাম মেস্তফা, সাবেক অতিরিক্ত পিপি অ্যাড, আজাহারুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ওসমান গণি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. ইউনুস আলী, অ্যাড. সরদার আমজাদ হোসেন, অ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন তোজাম, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, সাংবাদিক অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, সাবেক পিপি অ্যাড.তপন কুমার দাস, অ্যাড. আসাদুজ্জামান দিলু, অ্যাড. মোস্তফা জামান, অ্যাড. কার্তিক দাস, অ্যাড. তপন কুমার কুণ্ডু, অ্যাড. মোস্তফা নুরুল আলম, অ্যাড .আব্দুস সামাদ, অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ শতাধিক আইনজীবী।
রিমাণ্ড ও জামিন শুনানীকালে অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহ বলেন, সাতক্ষীরা পুরাতন আইনজীবী ভবনের জমি পুলিশ দখল করে নেয়ার ব্যাপারে অ্যাড. এম শাহ আলম কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে নিজে বাদী হয়ে মামলা করেন। এরই জের ধরে পুলিশ প্রশাসন জজ কোর্টের পিপি’র মামলায় এম শাহ আলমকে গ্রেপ্তার না করে দীর্ঘ বিলমম্বিত সময়ের পর বাদী লিয়াকতকে ডেকে এনে মামলা করিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। এ গ্রেপ্তার শুধু শাহ আলমকে গ্রেপ্তার নয়, তা দেশের সকল আইনজীবীদের গ্রেপ্তার করার শামিল। এতে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে অ্যাড. শাহ আলমের সম্পর্কের অবনতি হয়। বিচারপ্রার্থীরা যাতে প্রতারিত না হয় সেজন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে প্রতি জেলা আইনজীবী সমিতিকে টাউটদের তালিকা তৈরির বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে। সে অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলার গতবারের নির্বাচিত সভাপতি অ্যাড. শাহ আলম সভা ডেকে সংগঠলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ওসমান গণিসহ ১১জনের সাক্ষর সম্বলিত রেজুলেশন করে ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল ১৯ জন শিক্ষানবীশ আইনজীবীর তালিকা তৈরি করে। তার মধ্যে ১৯ নম্বর তালিকায় এ মামলার বাদী লিয়াকত হোসেনের নাম রয়েছে। তা ছাড়া মামলায় বাদি লিয়াকত হোসেন গত বছরের ৬ অক্টোবর সকাল ৯টায় শ্যামনগর সহকারী জজ আদলতে তার ব্যক্তিগত দেঃ ২৯/১৯ মামলার সাক্ষীর জন্য আাইনজীবী সমিতির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন। অথচ ওই দিন বা তার আশে নিকটবর্তী ওই মামলার কোন দিনই ছিল না। তা ছাড়া ডিজিটাল নিাপত্তা আইনের জামিন অযোগ্য ৩১ ধারায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতাসহ যেসব উপাদানের কথা বলা হয়েছে তার একটিও এ মামলায় নেই। তাছাড়া শিক্ষানবিশ আইনজীবী অ্যাড. লিয়াকত হোসেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলায় শুনানীতে অংশ নিয়েছেন এমন ভিডিও চিত্র আদালতে উপস্থান করে সে যে প্রকৃতপক্ষে টাউট তা প্রমান কারানোর চেষ্টা করা হয়। যে ডিভাইস থেকে টাউট হিসেবে বাদির গলায় আমি আইনজীবী নই, আমি টাউট লেখা সম্বলিত ছবি অ্যাড. এম শাহ আলমের নিদ্দিষ্ট ফেইসবুক আইডিতে ডাউনলোড করা হয়। তাই আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের কোন প্রয়োজন নেই। তাছাড়া সাতক্ষীরা পুরাতন আইনজীবী সমিতির ভবন ছেড়ে না দেয়ার ব্যাপারে অ্যাড. এম শাহ আলম ছিলেন অত্যন্ত কঠোর। সেজন্য তাকে কোন কারণ ছাড়াই রিমাণ্ড আবেদন জানানো হয়েছে। গ্রেপ্তারতৃত আসামী ও অপর চার আসামীকে রাষ্ট্রপক্ষের সকল আইনজীবী চেনেন। তাই সম্মানী একজন আইনজীবীর জামিন দিলে শর্ত ভঙ্গের কোন সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, রিমাণ্ড না মঞ্জুর করে আদালত অ্যাড. এম শাহ আলমকে দুৎ হাজার টাকা বণ্ডে স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেছেন। বিকেল চারটার দিকে জেলা কারাগার থেকে অ্যাড. শাহ আলম মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তির পর তিনি সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
(ঊষার আলো-এমএনএস)