UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড. ইউনূসের পক্ষে চিঠি দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ: ঢাবি শিক্ষক সমিতি

usharalodesk
সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩ ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট: নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্ব নেতাদের চিঠিকে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি প্রতিবাদ জানিয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি করেন।

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রতিটি সমাজে কিছু মানুষ থাকেন, যারা নীতিজ্ঞান বিবর্জিত এবং তারা অনেক সময় নানাভাবে প্রলোভনের মুখে পড়ে অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়। আমার ধারণাÑড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিদাতারা হলেন-এমন নীতিজ্ঞান বিবর্জিত কিছু মানুষ। তাদের হয়তোবা কোনো গোষ্ঠী, কোনো রাজনৈতিক দল বা কোনো ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ করেছেন। এ কারণেই তারা দুর্নীতি ও অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

মানববন্ধনে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, আমাদের বিচারব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে ড. ইউনূস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নোবেল বিজয়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। যারা বিবৃতি দিয়েছেন-তারা বিবৃতিটি পড়ে দেখেছেন কি না আমার প্রশ্ন আছে। চলমান বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করতে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা শ্রমিকদের দেওয়ার জন্য ড. ইউনূসকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৪৫০ কোটি টাকা তিনি ইতোমধ্যে দিয়েছেন। কর ফাঁকির জন্য ১২ কোটি টাকা তিনি প্রদান করেছেন। বিচার তিনি মেনে নিয়েছেন ও আপিল করেছেন।

ড. মাকসুদ কামাল আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিয়ে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় ড. ইউনূস চাপ প্রয়োগ করতে চাচ্ছেন। একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থই হলো দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আনা। দেশপ্রেম থাকলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে এত মানুষকে দিয়ে ড. ইউনূস বিজ্ঞাপন দিতেন না। মানববন্ধনে ঢাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, দেশের নাগরিক সমাজ, ঢাবির ৮৬৬ জন শিক্ষক এবং ৫০টি সংবাদপত্রের সম্পাদক যেসব বিবৃতি দিয়েছেন সেগুলো অত্যন্ত সুলিখিত ও লক্ষভেদী। এ দুঃসময়ে বিবৃতিগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করি। ড. ইউনূসের গতিবিধি, বক্তব্য ও তার কাজকর্ম আমরা দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করছি। তার টার্গেট বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। ইউনূসের বিরুদ্ধে ১৬৮টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে দুটি ফৌজদারি মামলা। বাকিগুলো কর ফাঁকিসহ নানা ধরনের মামলা।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবদুস ছামাদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিয়া রহমান, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মদ হাসান বাবু, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, সাবেক প্রক্টর অধাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ, কবি জসীমউদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ শাহীন খান, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ আবদুর রহিম, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।

ড. ইউনূস ইস্যুতে ঢাবির ৮৬৬ শিক্ষকের বিবৃতি: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম কেন্দ্র করে ‘বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের’ অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৬৬ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন। রোববার নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আমজাদ আলী ও অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ড. ইউনূসের স্বার্থ রক্ষার্থে বিভিন্ন দেশের ১৬০ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, নোবেলজয়ী ব্যক্তিবর্গের দেওয়া বিবৃতিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর আক্রমণ চলছে বলে যে দাবি করা হয়েছে তা অমূলক ও ভিত্তিহীন। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের বিচারিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে তারা সবাইকে আহ্বান জানান।

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা বিচারাধীন। অবসরে যাওয়ার আইন অমান্য করে তিনি ৭০ বছর বয়সেও পদ ছাড়তে সম্মত ছিলেন না। এ সংক্রান্ত মামলায় তিনি আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পর গ্রামীণ ব্যাংকের পদ ফিরে পেতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রভাবশালী দেশে লবিং করেছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, দাতা তহবিলের অর্থ বেআইনিভাবে হস্তান্তর, শ্রম আইন লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা ধরনের অভিযোগ আছে।

ঊষার আলো-এসএ