গত তিন মাসে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন সংক্রান্ত পৌনে তিন লাখের বেশি আবেদনের নিষ্পত্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর। রোববার আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান।
হুমায়ুন কবীর জানান, এখনো কয়েক লাখ আবেদন জমা আছে, যেগুলো আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এনআইডি সেবাকে নিয়ে আর্থিক লেনদেনের আশ্বাসে অপরাধী কোনো ধরনের চক্র যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্কও করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার দু’সপ্তাহ পর ১৯ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের এনআইডি ডিজি বলেছিলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে ঝুলে থাকা পৌনে চার লাখ এনআইডি সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে। এ কাজের অগ্রগতির বিষয়ে মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা ৩ লাখ ৭৮ হাজারের একটি আবেদন তিন মাসের ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শেষ করার বিষয় বলেছিলাম। ১৬ মার্চ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, সেদিন পর্যন্ত আমরা আগের আবেদনসহ দুই লাখ ৭৮ হাজার আবেদন শেষ করতে পেরেছিলাম। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে আরও তিন লাখ দুই হাজার আবেদন জমা পড়েছে। তিনি বলেন, যেসব আবেদন পেন্ডিং আছে, সেগুলো আমাদের আগামী ৬ মাসের (সেপ্টেম্বরের) মধ্যে ক্লিয়ার করতে হবে। আগে ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ হোক। যখন ভোটার নিবন্ধনের কাজটা কমে আসবে তখন আমরা পুরো মনোযোগ সেখানে দিতে পারব। ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে ৫ মে। জুনের মধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা শেষ করার কথা রয়েছে।
এনআইডি সংশোধনের কাজে আর্থিক লেনদেনে অভিযোগ এসেছে কিনা জানতে চাইলে এনআইডি ডিজি এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, কিছু কিছু জায়গায় এই চক্র কাজ করছে। কেউ কেউ টাকা পয়সা নিয়েছে এমন আবেদনও আমি পেয়েছি। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে ইসি কর্মীসহ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
হুমায়ুন কবীর বলেন, এ ক্ষেত্রে আমরা ডিবিকে কাজে লাগিয়েছি এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ঠাকুরগাঁওয়ে আমাদের একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে ধরা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নরসিংদীতে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, যে গতিতে আবেদন নিষ্পত্তি হচ্ছে, এই গতিতে কাজ হলে আমরা জনভোগান্তি কমাতে পারব।
এনআইডি সংশোধনের জন্য কাঠামোবদ্ধ কাজের জন্য তিনটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, নির্বাচনি কর্মকর্তারা প্রতিবেদন তৈরিতে আমরা ছক করেছি। তিনটি ছকে (যারা বিদেশে থেকে ভোটার হচ্ছেন, চাকরিজীবীদের জন্য একটি ছক এবং তৃতীয় হচ্ছে সাধারণ ছক) এই কাজ চলছে। প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় যেন নিয়মিত এনআইডি আবেদন সংশোধনের প্রক্রিয়া মনিটরিং করা যায়, সেই সিস্টেম ডেভেলপ করা হচ্ছে।
ঊষার আলো-এসএ