তিন উপজেলার মানুষের প্রাণের দাবি ব্রীজ নির্মাণের
পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর : মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের উপর কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী ঘাটের বাঁশের সাঁকোটি ভেঙ্গে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের পারাপার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, বাঁশের সাঁকোটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হলেও তা দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানাযায়, কপোতাক্ষ নদের উপর তিন উপজেলার সীমান্তবর্তী ত্রিমোহিনী ঘাটে এ সাঁকোটি অবস্থিত। এ ঘাট এলাকা দিয়ে কেশবপুর, মণিরামপুর ও কলারোয়া এ তিন উপজেলাসহ প্রতিদিন হাজারো মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা সাঁকোটি। দুই যুগের আধিক সময় আগে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে কেশবপুরের ত্রিমোহিনী এবং কলারোয়ার দেয়াড়ার কাশিয়াডাঙ্গা বাজার সংলগ্ন ঘাটে সাঁকোটি তৈরি করা হয়। এক সময়ে খোরস্রোতা এ নদ পারাপারের খেয়ার নৌকা ব্যাবহার করা হতো। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রাম্য অবকাঠামো উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলেও এই সাঁকোটির উন্নয়নে আজো কেউ এগিয়ে আসেনি। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে প্রায়ই সাঁকোটি মাপতে আসেন, তাতে মনে হয় যে খুব তাড়াতাড়ি হয়তো বা ব্রিজ নির্মাণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মাপের পর আর কোন খবর থাকে না? এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। আর যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহাল থাকার কারণে এলাকার কৃষিজীবী মানুষ উন্নয়ন অগ্রগতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কৃষি প্রধান ওই এলাকায় কৃষকের উৎপাদিত ফসল ধান, পাট ও মাছসহ বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য উপযুক্ত বাজার জাতের অভাবে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। এছাড়া স্কুল কলেজে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমজীবী মানুষ, ব্যবসায়িদের পণ্য সামগ্রী পারাপার যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। আকর্ষিক অসুস্থ ও মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিতে সময়ক্ষেপণ হয়ে অনেকেই অকালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছেন।
কৃষক শাহাদাত হোসেন, ইসমাইল হোসেন, মধু সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল ইসলাম মিন্টু, ইউপি সদস্য হারুনুর রশীদ, খোদা বকস্ গাজী, আফসার উদ্দিন, ডাঃ আল মামুন, শিক্ষক নাজমুল ইসলামসহ এলাকাবাসী জনদুর্ভোগ লাঘবে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
ত্রিমোহিনী ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ও দেয়াড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব রহমান মফে গাজী জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ ত্রিমোহিনী ঘাট একটি ব্যস্ততম স্থান। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ অতিকষ্টে এ ঘাট দিয়ে পারাপার হয়ে থাকেন। ফলে জনস্বার্থে স্থায়ীভাবে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন চেয়ারম্যানদ্বয়।
এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে থেকে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।