ঊষার আলো রিপোর্ট : ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও হেনস্তার ঘটনায় দুই শিক্ষকের বরখাস্তের দাবিতে বুধবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এর আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও প্রক্টর অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে, সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে উপাচার্য কর্তৃক দুই শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ বিচার না মেনে দুই শিক্ষকের স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারকে ভবনে রেখে প্রশাসনিক ভবন ও প্রক্টর অফিসে তালা দিয়ে বেলা সাড়ে ৩টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রীরা।
এ সময় ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় মুখার্জি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ ও ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন। তারা শিক্ষার্থীদের একাধিকবার মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ থাকার পর প্রশাসনিক ভবনের তালা ভেঙে ভিসি ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের আজ বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট সভায় তাদের পক্ষেই বিচার যাবে এমন আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ ছেড়ে দেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের দাবির সঙ্গে আমি একমত। তোমরা এ ঘটনায় যে বিচার দাবি করছ বৃহস্পতিবারের সিন্ডিকেট সভায় আমি তোমাদের কথাই বলব।
জানা যায়, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন শাহার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মার্চ আন্দোলন শুরু করেন ওই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেজারার ড. আতাউর রহমানকে প্রধান করে ৫ মার্চ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। একদিন পর ৬ মার্চ আন্দোলনকারীরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তারা ওই বিভাগের শিক্ষকদের নেমপ্লেট ভাঙচুর করে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান। দাবি মেনে তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকেও তদন্তের আওতায় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শিক্ষার্থী সৈয়দ সানজানা আহসান ছোঁয়া বলেন, আজ অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের যে বিচার হয়েছে আমরা তা মানি না। ভিসি স্যার তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করবেন এ বিশ্বাস আমাদের আছে। যতদিন এ দুই শিক্ষকের বিচার না হবে ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাব।
ঊষার আলো-এসএ