ঊষার আলো প্রতিবেদক : নগরীর দৌলতপুর থানাধীন মধ্যডাঙ্গা জিন্নাত ক্রস রোডের (মধ্যডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুলের পাশের) বাসিন্দা মো. আজিজ শেখের ছোট মেয়ে গৃহবধূ রাবেয়া বেগম (২৫)’র রহস্যজনক মৃত্যু ঘটনায় স্বামী মো, মাহমুদ (৩৪)কে গ্রেফতার করেছে। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত আনুমানিক রাত তিনটার দিকে ঘরের বাঁশের সাথে গলায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তার পরিবার। তাৎক্ষনিক পরিবারের লোকেরা তাকে খুমেক হাসপাতালের নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
১৪ এপ্রিল বুধবার সকাল ৭ টার দিকে ঘটনাটি পুলিশকে জানালে পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান ও সরোজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রাবেয়ার মায়ের অভিযোগ, এখন থেকে প্রায় দশ বছর আগে মোঃ লুৎফর শেখের ছোট ছেলে মধ্যডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুলের পাশের বাসিন্দা মোঃ মাহমুদ (৩৪) এর সাথে ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক রাবেয়ার সাথে বিয়ে হয়। মাহমুদ বেশির ভাগ সময়ই বসে থাকে। তবে কয়েক বছর ধরে সে মধুর চাক থেকে মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করে আসছে। যে কারণে ব্যবসার জন্য বিভিন্ন সময়ে তাকে নগদ টাকা গ্রহণ দেয়া হয়েছে। মাহমুদ আমার বাড়িতেই থাকে। সম্প্রতি মাহমুদ মধু ব্যবসার সাথে জড়িত একই এলাকার সুলতানের মেয়ের সাথে ঘনিষ্ঠ সর্ম্পকের মাধ্যমে পরকীয়াই জড়িয়ে পড়ে। এ সম্পর্কের জের ধরে দীর্ঘদিন এ বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে প্রতিনিয়ত মারামারি, কথা কাটাকাটি আর গন্ডগোল লেগেই থাকতো। আমার ধারণা, এ ঘটনার জের ধরেই মাহমুদ আমার মেয়েকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করার পর ঘরের বাঁশের ঝুলিয়ে রেখেছে।
এদিকে ১৪ এপ্রিল দুপুরে নিহতের ভাই আজমল শেখ (৩৬) বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তা করার অপরাধে মোঃ মাহমুদ (৩৪) ও অপর আসামী সুলতানের মেয়ে মোসাঃ নাজমিন (২৫) কে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১০।
বাদী জানান, এজাহার নামীয় আসামীদ্বয়ের মানষিক নির্যাতনের কারণে আজ আমি আমার বোনকে হারালাম আর দু’টি নিষ্প্রাণ শিশু হারালো তাদের মাকে ।
পরিবার সূত্র জানায়, ১৪ এপ্রিল বুধবার দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে খুমেক হাসপাতাল হতে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। বাদ আসর মধ্যডাঙ্গা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে মরহুমার জানাযা নামায শেষে মহেশ্বরপাশা (সাড়াডাঙ্গা ) কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনা মধ্যডাঙ্গায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই তাপস কুমার আঢ্য ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে এজাহার নামীয় আসামী মাহমুদ কে আটক করা হয়েছে এবং অপর আসামী মোসাঃ নাজমিনকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি আরো জানান, এটি আত্মহত্যা না শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে এটি আত্মহত্যা নাকি শ্বাসরুদ্ধের মাধ্যমে হত্যা। আটককৃত আসামী গুরুতর অসুস্থ থাকায় থানা হতে খুমেক হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে।