UsharAlo logo
বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নগরীর কালি পটকা উদ্ধারের নামে ৪০ হাজার টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ!

koushikkln
জুলাই ১৭, ২০২১ ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনা সদর ফাঁড়ির একজন পুলিশ কনস্টবলকে বদলি করা হলেও ৪০ হাজার টাকার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে অনেকটাই বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন কেএমপির কর্মকর্তারা।
ভুক্তভোগী জেবা ট্রান্সপোর্টের মালিক প্রদীপ সাহা জানান, গত ১২ তারিখ তার ট্রান্সপোর্ট যোগে ৭ বস্তা মাল আসে। সন্ধ্যা ৭টায় ওই মাল আসার পরে বস্তার মালিকসহ স্থানীয় কয়েকজন ৫টি বস্তা নিয়ে যান। বাকি দুই বস্তা মালামাল পরে নিবেন বলে জানিয়ে যায়। সন্ধ্যায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে বস্তার মধ্যে অবৈধ জিনিস আছে বলে সন্দেহ করে। এ সময় তিনি (প্রদীপ) গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে ছিলেন।
তিনি জানান, পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মিঠুনের উপস্থিতিতে বস্তা খুলে কালি পটকা উদ্ধার করেন। তারা ম্যানেজার মিঠুনকে মালের (বস্তার) মালিককে হাজির করার জন্য বলে। অন্যথায় মিঠুন ও গাড়ীর ড্রাইভারকে গ্রেফতারে হুমকি দিয়ে চলে যান। ওইদিন গভীর রাতে আবারো ডিবি পুলিশ ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়। এ সময় ম্যানেজার মিঠুন বস্তার মালিক সম্রাট মৃধাকে হাজির করেন। কিন্তু তাতেও কোন সমাধান হয়নি। পুলিশ এবার মিঠুন ও ড্রাইভারকে গ্রেফতার করার জন্য তাদের হাতে হাতকড়া পড়ান। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন নেতা গ্রেফতারের হাত থেকে রক্ষা করতে মিঠুনের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন। অনেক দেন দরবারের পরে বিষয়টি ৪০ হাজার টাকায় ফয়সালা হয়। কিন্তু ক্যাশে কোন টাকা না থাকায় রাতেই ৪০ হাজার টাকার উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড স্যার ইকবাল রোড শাখার একটি চেক লিখে নেয়। সকালে ব্যাংকে চেক ক্যাশ করার জন্য গেলে টাকা না থাকায় আবারো জেবা ট্রান্সপোর্টে এসে ওই চেক ফেরত দিয়ে নগদ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। প্রদীপ সাহা আরো জানান, স্থানীয় কয়েকজন বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন।
অপরদিকে সদর ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য মফিজুল ইসলাম বদলীর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি মোবাইলে জানান, ডিবির ওসি মোশাররফ হোসেন তার ব্যাচম্যান হওয়ায় তিনি তাকে মোবাইলে ঘটনাস্থলে ডাকেন। তিনি ফাড়ি ইনচার্জের অনুমতি নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। গিয়ে দেখেন ঘটনাস্থলে এসআই দেলোয়ার হোসেন, এএসআই মামুনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আমি কোন চেক নেইনি। চেক নিয়েছেন ইমরানুল হক বাবু ও মুনসুর। আমি কেন শাস্তি পেলাম।
ইমরানুল হক বাবু চেক নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ব্যাংকে ক্যাশ না হওয়ায় সকালে নগদ টাকা এনে ডিবিকে পাঠিয়ে দিয়েছি।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, টাকা বা চেক নেয়ার কোন ঘটনাই ঘটেনি। কারা নিয়েছে, বিষয়টি আমার জানা নেই।
উল্লেখ্য, কেএমপির সদর দপ্তরের প্রেরিত খবরে জানা যায়, ১৪ জুলাই রাত পৌনে ১টায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে খুলনা থানাধীন স্টেশন রোডস্থ নিউ জেবা কুরিয়ার এন্ড পার্সেল সার্ভিস এর সামনে পাঁকা রাস্তার উপর হতে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সুইচগেইট নয়াকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর মৃধার ছেলে মোঃ সম্রাট মৃধাকে (২২) তিন হাজারটি (৬০ প্যাকেট) ভারতের তৈরী কালি পটকাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্রাটের বর্তমান ঠিকানা ৩৯/১, আউটার বাইপাস সড়ক, সোনাডাঙ্গা ৩য় ফেজ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দীর্ঘদিন খুলনা মহানগর এলাকায় ভারতের তৈরী কালি পটকা ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ করে আসছে। তার বিরুদ্ধে খুলনা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।