খুলনা বিভাগের ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর উদ্যোগে বিটিআরসি’র নতুন লাইসেন্সিং নীতিমালা নিয়ে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকেল ৪টায় নগরীর একটি অভিযাত হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নতুন লাইসেন্সিং কাঠামোতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও দেশীয় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সুরক্ষিত করতে ৮ দফা দাবি তোলা হয়।
অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন আইএসপি উদ্যোক্তারা বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তারা বিদ্যমান চার-স্তরবিশিষ্ট লাইসেন্সিং কাঠামো (জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা, থানা) বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং সরাসরি লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও দেশীয় উদ্যোক্তদের বিনিয়োগ সুরক্ষায় তারা বেশ কিছু দাবী উত্থাপন করেন। দাবীগুলোর মধ্যে বিদ্যমান লাইসেন্সিং কাঠামো বজায় রাখা এবং নতুন করে কোনো তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া চালু না করা। বিদ্যমান লাইসেন্সধারীদের সহজ উপায়ে লাইসেন্স আপগ্রেড বা ডাউনগ্রেড করার সুযোগ দেওয়া। ফিক্সড ব্রডব্যান্ড টেলিকম সেবা প্রদানকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইপিটিএসপি (ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিফোনি সার্ভিস প্রোভাইডার) লাইসেন্স প্রদান করা। এফটিএসপিদের (ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডার) একচেটিয়া অধিকার প্রদান, যাতে তারা তারযুক্ত ও ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে লাস্ট মাইল সংযোগ প্রদান করতে পারে। এনটিটিএন (নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) অপারেটরদের শুধুমাত্র এফটিএসপি’র পয়েন্ট অব প্রেজেন্স এবং বেজ ট্রান্সিভার-এ সংযোগ সরবরাহের জন্য সীমাবদ্ধ রাখা। এফটিএসপিদের ব্যান্ডউইডথ ও একটিভ ডিভাইস শেয়ার করার অনুমতি প্রদান, যাতে নেটওয়ার্কের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং রাস্তায় তারের জঞ্জাল কমে। ফিক্সড টেলিকম অপারেটরদের আইপিটিভি, ওটিটি, আইওটি ও আইপি ভিত্তিক অন্যান্য সেবা চালু করার অনুমতি দেওয়া। নীতি সহায়তা প্রদান যাতে কোয়ালিটি অফ সার্ভিস বৃদ্ধি করতে পারে। বক্তারা বিটিআরসি’র নতুন লাইসেন্সিং নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনের দাবি জানান।
এছাড়াও বক্তারা আইএসপি ব্যবসা দখলের জন্য সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। তারা উল্লেখ করেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারী জয়পুরহাটে তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক মোঃ বেলাল হোসেনকে অবৈধ রিসেলার সাদ্দাম গং মারধর করে এবং পরবর্তিতে মিথ্যা মামলা করে তাদেরকে গ্রেফতার করায়, যা স্থানীয় আইএসপি ব্যবসায়ীদের জন্য হুমকি স্বরূপ। এ ধরনের অপরাধের সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
আলোচনা ও দাবী উত্থাপন শেষে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন আইএসপিএবির পরিচালক সাব্বির আহমেদ ও ফুয়াদ মুহাম্মদ শরফুদ্দিন , খুলনা বিভাগ আইএসপিএবি’র আহ্বায়ক মওদুদ আহমেদ, নিয়ামুল হক, মিঠু হাওলাদার, ফেরদৌস তুষার, আজিজ উদ্দিন, শরীফ আজিবুর রহমান, মো: তহিদুল ইসলাম, খুরশিদ আলমসহ খুলনা বিভাগের অন্যান্য আইএসপি প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, খুলনাসহ বিভাগের দশ জেলায় স্থানীয় পর্যায়ে ১২৫টি ও জাতীয় প্রায় আরও ৩০টি ব্রডব্যান্ড সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যারা প্রায় ২ লক্ষ গ্রাহককে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদান করে আসছে।
ঊআ-বিএস