ঊষার আলো রিপোর্ট : প্রজাপতিসহ সব পতঙ্গ টিকিয়ে রাখতে জৈববৈচিত্র্যের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, প্রজাপতি এই পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরাগায়ণের মাধ্যমে প্রজাপতি পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং বনাঞ্চল রক্ষায় ভ‚মিকা রাখছে। প্রজাপতিসহ বিভিন্ন পতঙ্গ আমাদের বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রেখেছে।
শুক্রবার ‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ স্লোগানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত প্রজাপতি মেলায় তিনি এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে মেলার চতুর্দশ আসরের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, প্রজাপতির কাছ থেকে মানুষের শেখার আছে। প্রজাপতি পরাগায়ণের মাধ্যমে কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়াই আমাদের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ধর্ম, বর্ণ এবং বৈচিত্র্যেভেদে মানুষের কাছেও সব মানুষ নিরাপদ হতে হবে। প্রকৃতির সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে তিনি সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা মুকিত মজুমদার বাবু, বন বিভাগের বণ্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মুরাদ বিন আজিজ প্রমুখ।
দিনব্যাপী মেলার আয়োজনের মধ্যে ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতিবিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতিবিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণী। মেলা উপলক্ষ্যে প্রজাপতি পার্ক ও গবেষণা কেন্দ্র জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। দিনব্যাপী সেখানে জীবন্ত প্রজাপতি, প্রজাপতিবান্ধব বৃক্ষরাজি ও প্রজনন ক্ষেত্রসহ উন্মুক্ত বাগান ঘুরে দেখেন দর্শনার্থীরা।
মেলার আয়োজনকে ঘিরে শিশু-কিশোরদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। হরেক রকমের প্রজাপতির উড়াউড়ি শিশু-কিশোরদের মনে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করে।
এবারের আসরে প্রকৃতি সম্পর্কিত রিপোর্টিংয়ের জন্য বাটারফ্লাই মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সদস্য সজীবুর রহমান সজীব। পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য বন ও প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘প্লানটেশন ফর নেচার’-এর প্রতিষ্ঠাতা সবুজ চাকমাকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ লাভ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির আহমেদ।
ঊষার আলো-এসএ