UsharAlo logo
বুধবার, ২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রার্থীদের প্রচারের সব ব্যবস্থা করতে পারবে ইসি

ঊষার আলো রিপোর্ট
মে ২১, ২০২৫ ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সব প্রার্থীর প্রচারের সব ধরনের ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে আয়োজন করতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সব প্রার্থীকে এক মঞ্চে এনে তাদের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণার ব্যবস্থাও করতে পারবে। শুধু তাই নয়, তাদের ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট নির্বাচনি এলাকায় টানানোর ব্যবস্থাও করবে ইসি। তবে এর ব্যয় বহন করবেন প্রার্থীরা। এসব বিধান যুক্ত করে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে এ সংক্রান্ত কমিটি। ওই খসড়া বিধিমালা আজ অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় তোলা হবে। কমিশন অনুমোদন দিলে তা কার্যকর করার ব্যবস্থা নেবে ইসি সচিবালয়। ইসির নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় দুটি আলোচ্যসূচি রয়েছে। এগেুলো হলো-রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ এবং সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধান আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনার মধ্যে এ দুটি খসড়া চূড়ান্ত করল ইসি। সাধারণত আরপিওর সঙ্গে মিল রেখে বিধিমালা ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ  বলেন, কমিশন সভায় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা এবং নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা আলোচ্যসূচি হিসাবে রয়েছে। এ দুটি বিষয়ের ওপর আলোচনা হবে। কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে, ইসি সচিবালয় তা প্রতিপালন করবে।

জানা যায়, খসড়া আচরণ বিধিমালায় এবার বেশকিছু নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে প্রচারের সুযোগ রাখা। ইসি চাইলে পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে। এর যুক্তি হিসাবে ইসির কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষামূলকভাবে এটি সফল হলে নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয় ও সহিংসতা কমে আসবে এবং স্বচ্ছতা বাড়বে। কালোটাকার প্রয়োগ বন্ধ হবে। কারণ, নির্বাচনি সব ধরনের সরঞ্জাম ইসি থেকে সরবরাহ করা হবে।

বিগত কমিশনগুলোর সংলাপে বেশ কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক দল সরকারি খরচে নির্বাচনি প্রচারের ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছিল। বিধিমালায় ইসি নিজ তত্ত্বাবধানে প্রচারের ব্যবস্থার সুযোগ রাখলেও ওই কাজের খরচের টাকা প্রার্থীদের বহন করার বিধান রেখেছে। এ বিষয়ে খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বা কমিশনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নির্বাচনি প্রচার চলবে। ওই নির্বাচনের সভাস্থল, মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট প্রভৃতি খাতের ব্যয় সংবলিত বাজেট এবং কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন করবেন ওই কর্মকর্তা। প্রার্থীরা ইসির নির্ধারিত হারে ওই কর্মকর্তার নির্ধারিত কোড/হিসাব নম্বরে টাকা জমা দেবেন। নির্বাচনের পর উদ্ধৃত টাকা থাকলে তা সমহারে প্রার্থীদের ফেরত দেওয়া হবে।

খসড়া বিধিমালায় ডিজিটাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারকে আইনি কাঠামোতে যুক্ত করেছে। প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করতে চাইলে তার নাম, অ্যাকাউন্ট, আইডি প্রভৃতি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। ডিজিটাল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারও ব্যক্তিগত চরিত্রহনন করে প্রচারণা চালানো যাবে না। কেউ প্রচার চালালে তার বিরুদ্ধে সাইবার বা ডিজিটাল সুরক্ষা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার খরচকে নির্বাচনি ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনি প্রচারে সরকারি সুবিধাভোগী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর বিধিনিষেধ আরও কঠোর করা হয়েছে। প্রার্থীদের প্রতি সাত দিন পর নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে নির্বাচনের পর একবারই হিসাব জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এছাড়া মাইক ব্যবহারে শব্দের মান ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

ঊষার আলো-এসএ