ফুলতলার ধুলগ্রাম সিদ্দিপাশা ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে তারই এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় তিনদিন ধরে ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে দুই যুবক। ফোনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভারতে পাচারের চেষ্টায়ও চালায় তারা। পরে এক নারীর সহযোগিতায় মুক্ত হন তিনি। এ ঘটনায় ওই আত্মীয়কে স্থানীয়রা ধরে পুলিশে দিলেও তাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই গৃহবধূকে মঙ্গলবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের ধুলগ্রামে স্বামীর সঙ্গে রাগ করে বাড়ি থেকে চাচার বাড়ির উদ্দেশে বের হন। পথে তার আত্মীয় মশিয়ার তাকে তার বোনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জুসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে ইছামতি গ্রামের এক নির্জন বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে ভুক্তভোগী তাদেরই প্রতিবেশী রুবেলকে দেখতে পায়। রুবেল ফোনে তার বন্ধু বিদ্যুৎকে ডেকে নেয়। ওই বাড়িতে একদিন আটকে রেখে তাকে মারধর করে ধর্ষণ করে রুবেল ও বিদ্যুৎ। এ সময় মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিও করে তারা। পরদিন ওই বাসা থেকে তাকে বের করে নড়াইলের কালিয়ায় এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানেও দুইদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে ওই দুই যুবক। রোববার সকালে ওই বাড়ির অন্য এক নারী ভুক্তভোগীকে অসুস্থ অবস্থায় দেখে। তখন তার কাছে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সহযোগিতা চাইলে ওই নারী রুবেলকে তার বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে। পরে রুবেল ভুক্তভোগীর স্বামীকে তার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে দুজনকে ভারতে পাঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। স্থানীয়রা জানতে পেরে ওই ভুক্তভোগীর আত্মীয় মশিয়ারকে ধরে অভয়নগর থানায় সোর্পদ করে। এরই মধ্যে ভুক্তভোগী ওই নারী রোববার যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। ওইদিনই অভয়নগর থানায় এসে মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ। পরে দুইদিন বাসায় চিকিৎসা নেয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে তিনদিন ধরে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। মশিয়ার আমাকে ডেকে নিয়ে রুবেলের হাতে তুলে দেয়। আমি এর বিচার চাই।’ভুক্তভোগীর এক স্বজন বলেন, রুবেল ও বিদ্যুৎ তিনদিন ধরে তাকে নির্যাতন করেছে। মশিয়ার তাকে তুলে দেয় রুবেলের হাতে। মশিয়ারকে গ্রামের মানুষ ধরে পুলিশে দিলেও পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। এমন ঘটনা যেন আর কোনো নারীর সঙ্গে না ঘটে।’
এদিকে পুলিশ বলছে, মশিয়ারের নাম এজহারে না থাকায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে। অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম আতিকুল ইসলাম বলেন, আসামি কাউকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মশিয়ারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাদীপক্ষ তাকে ধরে নিয়ে আসে। তবে ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। মামলার এজহারেও তার নাম নেই। তবে এলাকাবাসি জানান এ ঘটনার মুল মাষ্টারমাইন্ড মশিউর অতিদ্রত তাকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব ঘটনা রহস্য উম্মোচন হবে।