৭ বছর আগে নরসিংদী সদর উপজেলার ঘোড়াদিয়া সোনাতলা এলাকার রহমান মুন্সীর মেয়ে তহুরা খাতুনকে বিয়ে করেন সাইদুর রহমান রহিদ। তাদের সংসারে রয়েছে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। সম্প্রতি স্ত্রী স্থায়ীভাবে নিজের বাপের বাড়িতে থাকা নিয়ে তার সাথে কলহ চলে আসছিল।
এরই জের ধরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গতকাল রাতে বাড়ি থেকে বের হয় স্বামী। পুরানপাড়া এলাকায় চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে হত্যা করে। আজ (১৪ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহত মো. সাইদুর রহমান রহিদ ঢাকা দক্ষিণ কাফরুল এলাকার মো. ইসলাম শেখের ছেলে। তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে আইটি প্রোভাইডার হিসেবে চাকরি করেতেন।
মারা যাওয়ার আগে ফেসবুকে লিখে গেছেন, প্রতিটি ছেলের জীবনেই প্রথম প্রেম তার মা, দ্বিতীয় জন সহধর্মিণী আর তৃতীয় তার সন্তান। আমা পারসেপশন ছোটবেলা থেকেই এমন। কিন্তু বিবাহিত জীবনে এসে আমি দুটোকে ব্যালেন্স করতে পারলাম না। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল, মাজখানে তাহুরা ও তার পরিবার দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। আজ ৪ মাস ২৩ দিন আমরা সেপারেশনে আছি। আমি অনেক আকুতি-মিনতি করেছি, বাঁচতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম না। আজকেও তুমি নিজে আমাকে ডেকে এনে আমার বাচ্চাকে দুচোখ ভরে দেখতে দিলে না। আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও ভাবতে পারি না; সেই তুমি প্রতারণা করলে। তোরা আমাকে অনেক অপমান করেছিস। ভালো থাকিস তোরা সবাই। এই পৃথিবীতে আমার সফর এই পর্যন্তই ছিল। পৃথিবী আমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। বিদায় আলবিদা।
নিহতের স্বজনদের দাবি, স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছেন সাইদুর। মারা যাওয়ার আগে নিজের ফেসবুকে সবই লিখে গেছে। শেষবারের মতো তার সন্তানের মুখটিও দেখায়নি তার স্ত্রী। ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমরা বিচার দাবি করছি।
রেলওয়ে ইনচার্জ শহিদুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।