কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা ওমর ফারুক হুদা। সম্প্রতি পৈতৃক সম্পত্তিতে একটি ভবন নির্মাণ করতে চান তিনি। তবে এতে বাধা দেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন আফসেল। ওমর ফারুকের দাবি, বহুতল ভবন নির্মাণ করতে হলে একটি ফ্লোর লিখে দিতে হবে, এমন শর্ত দিয়েছেন আফসেল। আর না দিলে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পুরো জায়গা দখল করার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওই কৃষকদল নেতা।
সম্প্রতি এ নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওমর ফারুক। তিনি জানান, কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দর সড়ক মোড়ে সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে সৈকত মার্কেট ও পশ্চিমাংশের কিছু জায়গাটি তাদের। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ জমির মালিকানা দাবি করলেও মামলায় হেরেছে তারা। জমিটি দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করছে ওমর ফারুকের পরিবার। তবে উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করতে গেলেই নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাদের।
২০০৩ সালে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল, যা বর্তমানে কুতুবদিয়া সহকারী জজ আদালতে বিচারাধীন। তবে ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আদালতে লিখিত দেন, তারা বিএস-২৭২ নাম্বার খতিয়ানের কোনো জমির মালিক না।
সম্প্রতি বিরোধপূর্ণ জমিটিতে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন ওমর ফারুকের পরিবার। এ সময় তাদের বাধা দেন কৃষকদলের নেতা গিয়াস উদ্দিন আফসেল। নিজেকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীল পরিচয় দিয়ে ওমর ফারুককে শর্ত দেন, বহুতল ভবন নির্মাণ করলে একটি ফ্লোর তার নামে লিখে দিতে হবে। দাবি না মানলে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে পুরো জমি দখল করে নেওয়ার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে ওমর ফারুকের কাছে আফসেলের সঙ্গে কথোপকথনের দুটি অডিও রেকর্ড রয়েছে বলে জানান তিনি।
ওমর ফারুক বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি বানিয়ে আমাদের জমিতে উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। সবশেষ সভাপতি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা। সরকার পরিবর্তনের পর আমরা ভেবেছিলাম এবার হয়তো কাজ করতে পারব। কিন্তু নতুন করে কৃষকদল নেতা গিয়াস উদ্দিন আফসেল হুমকি দিতে শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘গিয়াস উদ্দিন আফসেল ফোনে হুমকি দিয়েছেন। বলেছে, তার দাবি না মানলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবেন। পুলিশ দিয়ে হয়রানি করবেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফ্লোর দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে গিয়াস উদ্দিন আফসেল বলেন, ‘বিরোধীপূর্ণ জায়গা নিয়ে আমার কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। আমি স্কুল পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো হুমকি দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জায়গাটি নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন। মামলার রায়ে যে পক্ষই জিতুক সে জমি বুঝে নিবে। যতদিন আমি দায়িত্বে আছি ততদিন বিদ্যালয়ের স্বার্থ দেখব। সম্প্রতি সদর এসিল্যান্ড জায়গাটি পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, বিএস-২৭২ নাম্বার খতিয়ানে ওমর ফারুকের কোনো জমি নেই।’
এ বিষয়ে সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমর চন্দ্র দেবনাথের মন্তব্য নিতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি এর উত্তর দেননি।
ঊষার আলো-এসএ