UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের নতুন হেডকোচ ফিল সিমন্স এখন ঢাকায়

usharalodesk
অক্টোবর ১৬, ২০২৪ ১:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ক্রীড়া ডেস্ক : বিসিবিপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের বিদায় এক রকম নিশ্চিতই ছিল। মাঝে কিছুটা সময় লেগেছে এই যা। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) হাথুরুকে আনুষ্ঠানিক বিদায় দিয়ে দিয়েছে বিসিবি। সেই সঙ্গে নতুন কোচেরও নাম ঘোষণা করেছেন বিসিবিপ্রধান। আগামী চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্সকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় করা কোচ ফিল সিমন্স হচ্ছে এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হেডকোচ। সেই ঘোষণা পেরুবার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই আজ সকালে ঢাকায় পা রেখেছেন ফিল  সিমন্স।

নতুন কোচ প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান সিরিজ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচ নিয়োগ দেওয়ার। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন হেড কোচ হিসেবে ফিল সিমন্স চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কাজ করবেন। বোর্ড সভাপতির বক্তব্য অনুযায়ী, ২১ তারিখ থেকে শুরু হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তিনিই থাকছেন দলের কোচ।

সিমন্সের সমৃদ্ধ কোচিং ক্যারিয়ার নিয়ে বিসিবিপ্রধান বলেন, তিনি বিভিন্ন সময় কয়েকটি দেশের প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই মেয়াদে ছিলেন। এখনো পাকিস্তানে কাজ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করেছেন। তার কোচিং ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ। তা ছাড়া এটি লম্বা সময়ের জন্য না। অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 তিনি বলেন, উনি কঠোর পরিশ্রমী। তার কাজের ধরন আমি দেখেছি। যখন জিম্বাবুয়ে খেলতে এসেছিল, আমি ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেছি। কীভাবে তিনি চিন্তা করেন, অনুপ্রেরণা জোগায় সেটি নিয়ে কথা হয়েছে। এগুলো দেখে আমার ভালো লেগেছে। তার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। সবকিছু মিলিয়ে এখন সেরা অপশন।

খেলোয়াড়ি জীবনে সিমন্স ছিলেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি পেস বোলিং করতেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। নামের পাশে ২৬ টেস্ট এবং ১৪৩ ওয়ানডে। টেস্টে তার আছে হাজারের ওপর রান, ওয়ানডেতে ৩৬৭৫। বল হাতে টেস্টে ৪ এবং ওয়ানডেতে ৮৩ উইকেট শিকার করেছেন সিমন্স।

২০০২ সালে অবসরের পর কোচিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন সিমন্স। প্রথম কাজ জিম্বাবুয়ের হারারেভিত্তিক একটি একাডেমিতে। সেখান থেকেই পরিচয়ের সুবাদে ২০০৪ সালের মে মাসে জিম্বাবুয়ের হেডকোচ নির্বাচিত হন সিমন্স। ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে সেই চাকরি হারান।

এরপর আয়ারল্যান্ডের হেডকোচ হিসেবে নিয়োগ পান সিমন্স। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর আয়ারল্যান্ডের হেডকোচ হন। সিমন্সের অধীনে আয়ারল্যান্ড বেশ কয়েকটি ট্রফি জিতেছে, আইসিসির প্রতিটি বড় ইভেন্টে কোয়ালিফাই করেছে।

২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। ২০১৫ বিশ্বকাপে তারা হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়েকে। বলতে গেলে সিমন্সের কোচিংয়েই জায়ান্ট কিলার উপাধি পান আইরিশরা।

তাই এই কোচকে সহজে ছাড়তে চায়নি আয়ারল্যান্ড। ২২৪ ম্যাচে তার কোচিংয়ে খেলেছেন আইরিশরা, যা কিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো কোচের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কোচিং করানোর রেকর্ড।

২০১৫ সালের মার্চে নিজের দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে প্রস্তাব পান সিমন্স। হেডকোচের দায়িত্ব নিয়ে পরের বছরই (২০১৬) সালে ক্যারিবীয়দের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতান। অথচ তার দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল রীতিমতো ধুঁকছিল। সিমন্সই তাদের সেরা ১০ র্যাংকিংয়ে ফিরিয়ে আনেন।

এরপর আফগানিস্তানের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান সিমন্স। সেখান থেকে ২০১৭ সালে দলটির হেডকোচও হয়ে যান। এরপর ২০১৯ সালের জুনে কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের কোচ হন সিমন্স।

সে বছরই অক্টোবর মাসে ফের তাকে হেডকোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর পদত্যাগ করেন সিমন্স। কিন্তু বোর্ডের অনুরোধে অস্ট্রেলিয়া সফরেও ক্যারিবীয়দের কোচিং করান তিনি।

২০২৩ সালে পাকিস্তান সুপার লিগের করাচি কিংসের হেডকোচ হিসেবে নিয়োগ পান সিমন্স। পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পাপুয়া নিউগিনির স্পেশালিস্ট কোচ হিসেবে স্বল্পমেয়াদে কাজ করেন তিনি।

সেখান থেকে তার পরবর্তী গন্তব্য হলো বাংলাদেশ। আপাতত ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত তার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বিসিবির। তবে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে যেই সাফল্য তার, সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেবেন এই কোচ দর্শকদের প্রত্যাশা অন্তত তেমনটিই।

ঊষার আলো-এসএ