UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ১লা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে” – প্রধানমন্ত্রী

pial
অক্টোবর ২৭, ২০২২ ২:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সৈয়দ রাসেল, কলাপাড়া : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গতিময় পরিবর্তনের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প কার্যক্রমের দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু পায়রা সমুদ্রবন্দরে উন্নয়নমূলক কাজের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে আরও ভালো সুযোগ-সুবিধাসহ এর সুষ্ঠু কার্যক্রম নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পায়রা বন্দরের উন্নয়ন কর্মকান্ড, এটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অর্থ দিয়েই তৈরি হচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, এই বন্দরটাই এক সময় আমরা গভীর সমুদ্রবন্দরে রূপান্তর করতে পারব। অচিরেই দক্ষিণাঞ্চলের সাথে রেল সড়কে সংযুক্ত করা হবে, দক্ষিণ অঞ্চলের আরেকটি চর আছে সোনারচর যেখানে একইসাথে সূর্যোদয় সূর্যাস্ত দুটোই একসাথে উপভোগ করা যায়, ওই সোনারচরকে পর্যটকদের জন্য একটি দর্শনীয় জায়গায় পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে, পর্যটকরা একইসাথে কুয়াকাটা ও সোনারচর ভ্রমণ করতে পারবে। বাংলাদেশ একটি ব-দ্বীপ এই এই ব-দ্বীপটিই আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য উন্নত সমৃদ্ধশালী করা একান্ত প্রয়োজন সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ডেল্টা প্লান, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে উন্নয়ন সমৃদ্ধিশালী একটি দেশ।

ওই সময়ে পায়রা সমুদ্র বন্দরের লালুয়া ইউনিয়নের চারিপাড়ায় এক নম্বর জেটিতে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল মো: সোহায়েল, এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, সচিব নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, আমন্ত্রিত সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, দেশী-বিদেশী নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, পায়রা বন্দরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা বৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ ও সাধারণ জনগণ।
পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান তার সূচনা বক্তব্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে বলেন “এগিয়ে চলো বাংলাদেশ, দেখো আগামীর পায়রা”

উল্লেখ্য উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলে ক্যাপিটাল ও মেনটেনেন্স ড্রেজিং, আটটি সহায়ক জলযান উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল এবং ছয় লেন বিশিষ্ট সংযোগ সড়ক ও আন্ধারমানিক নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ।

প্রধানমন্ত্রী তার স্বপ্নের প্রকল্প সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে প্রায় ১১,০৭২ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সরাসরি ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। সমুদ্রবন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে একটি ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০-১২৫ মিটার-চওড়া এবং ১০ দশমিক ৫ মিটার-গভীর চ্যানেল তৈরি ও ফার্স্ট টার্মিনাল কাজ শেষ হলে, বন্দরে ৪০ হাজার টন কার্গো বা ৩ হাজারটি কনটেইনার বোঝাই জাহাজ ডক করার সক্ষমতা তৈরি হবে।

ক্যাপিটাল ড্রেজিং চ্যানেলে আনুমানিক ৪,৯৫০ কোটি টাকা খরচ হবে এবং বেলজিয়াম ভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি – জান ডি নুল ড্রেজিংয়ের কাজ করবে।

পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য ২০৯.৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাহাজ ও নৌযানগুলো বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিদেশী জাহাজের আগমন ও প্রস্থান পর্যবেক্ষণ এবং চ্যানেল রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করবে।

দুটি পাইলট ভেসেল, দুটি হেভি ডিউটি স্পিডবোট, একটি বয় লেইং ভেসেল, একটি সার্ভে বোট এবং দুটি টাগবোটসহ আটটি জাহাজের উদ্বোধন করা হয়। প্রথম টার্মিনাল, ছয় লেনের মহাসড়ক এবং সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিনটি বিদেশী জাহাজ একযোগে কন্টেইনার বা বাল্ক কার্গো ডক করতে পারবে। ৪,৫১৬.৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি চালু করা হবে। ৬.৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেনের সংযোগ সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) নির্মাণ করছে।

৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।পায়রা সমুদ্রবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য আন্ধারমানিক নদীর ওপর ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে ১ হাজার ১৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু।

সেতুটি ৩০ মাসে (আড়াই বছর) নির্মিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পায়রা সমুদ্র বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন , এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্দরটিকে তার পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করতে সক্ষম করবে এবং দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ করবে, যার সুফল জাতি যুগ যুগ ধরে ভোগ করবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে তিনগুণ বড় বন্দর হবে এই পায়রা সমুদ্র বন্দর।

উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সমুদ্র বন্দর উদ্বোধন করেন, উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত ২৫৬টি সমুদ্রগামী জাহাজ বন্দরে এসেছে, যার মাধ্যমে প্রায় ৬১৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।

(ঊষার আলো-এফএসপি)