UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাক্তি কেন্দ্রিক লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকরা

pial
জুন ২৩, ২০২২ ৪:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আরিফুর রহমান (বাগেরহাট) : বাগেরহাটের রামপাল উপজলার বেশ কয়েকটি সরকারি রেকর্ডিয় খালে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে এক শ্রেনীর কতিথ প্রভবশালীরা জোর করে মাছ চাষ করে আসছেন। খালে বাঁধ থাকায় প্রকিবছরের ন্যায় এ বছরও চলতি বর্ষা মৌসুমে এলাকায় জলাবদ্ধতা সষ্টি হচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

এছাড়া প্রবাহমান খালে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করে ব্যাক্তি কেন্দ্রিক লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শতশত কৃষক। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, রামপাল উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের গিলাতলা দেয়াল ডাঙ্গা এলাকার কতিথ প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি গিলাতলা পশ্চিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন স্যাদলার খালে সেতুর কাছে বাঁধ দিয়ে রেখেছে।
স্থানীয় লোকজন বলেছে খালে বাঁধ থাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বর্ষা হলে পানিতে এলাকার বাড়ি ঘর তলিয়ে যাচ্ছে। সাধারন মানুষের চলাচল ব্যহত হচ্ছে। এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা বলেন দেয়ালডাঙ্গা এলাকার আবু বকর তরফদার গত ২/৩ বছর খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন।

আবু বকরের বাঁধের দক্ষিন পাশে ওই খালে রয়েছে মিজান মল্লিকের বাঁধ। তিনিও অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। মিজান মল্লিকের পাশাপাশি রয়েছে তায়েব আলী, বুলু মেম্বার , জাকার শেখ ও ইসরাফিল শেখও খালে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করছে।

স্থানীয় জমি মালিক ও কৃষকরা বলেন, এরা দীর্ঘদিন ধরে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। পানি সরবরাহ ঠিক মতো না করায় বর্ষাকালে পানিতে এলাকা তলিয়ে যায়। পানি সরবরাহ ঠিক মতো না করায় রাস্তা-ঘাট পানিতে তলানো থাকে। লোকজন এক স্থান থেকে আরেক স্থানে চলাচল করতে পারেন না। এমনকি ফসল ফলাতেও হিমসিম খেতে হয়।

এদিকে গিলাতলা- রামপাল সড়কের চন্ডিতলা নামক স্থানে বাবুল কাজি নামের অপর এক ব্যাক্তি ঘাটের খাল নামক একটি খালে বাঁধ দিয়ে রেখেছেন। এর ফলে এই এলাকায় পানি সরবরাহ ঠিক মতো হচ্ছে না। বর্ষা কালে এলাকায় পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন বলেন এ খালে বাঁধ থাকায় আমাদের বিশেষ করে বর্ষা কালে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। রাস্তা-ঘাট বাড়ি ঘরের চারপাশ পানিতে তলানো থাকে।

সরোজমিন ওই বাঁধের কাছে গিয়ে দেখা গেছে পানি সরবরাহ করার জন্য ছোট একটি পাইপ বসানো হয়েছে। ওই পাইপ দিয়ে যে পানি বের হচ্ছে তা এলাকাবাসির তেমন কাজ আসছে না। এলাকাবাসি বলেছে এবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ওই খালের বাঁধ কেটে না দিলে তাদের পরিণতি ভয়াবহ হবে।

এছাড়াও উপজেলার হুড়কা, পেড়িখালীর সাতপুকুরিয়া, ঝনঝনিয়ায় শাহীন, হাফিজুর রহমান ও সালাম মেম্বার বেশ কিছু খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি বলেন, এক শ্রেনীর লোক দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার কারনে সাধারন মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বছরের পর বছর অবৈধভাবে সরকারী খালে জোর করে বাধ দিয়ে মাছ করায় জনদুর্ভোগের বিষয়ে রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসন সব দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার হয় না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র বাগেরহাট জেলা নেতা এম, এ সবুর রানা বলেন, বাগেরহাটে নদী খাল দখলের মহোৎসব চলছে। প্রশাসন নির্বিকার। এক দিকে সরকার নদী খাল সচলের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ দিয়েছেন। অন্য দিকে সরকারি সংস্থাসহ নদী খাল খেকোরা বাঁধ দিয়ে ও স্থাপনা নির্মাণ করে নদী রক্ষা আইন অমান্য করছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান। প্রশাসনিক ভাবে এসব অবৈধ খাল দখল কারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে দুর্ভোগের খেসারত দিতে হয় সাধারন মানুষকে।

উপজেলা প্রশাসন বলছেন, যেসব সরকারি খালে অবৈধ বাঁধ আছে তা চিহ্নিত করে বাঁধ কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি সরকারি খালে থাকা অবৈধ বাঁধ কেট দেয়া হয়েছে। যে সব খালে এখনও বাঁধ আছে তা সহসা কেটে দেয়া হবে।

(ঊষার আলো-এফএসপি)