UsharAlo logo
শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাবার স্বপ্ন সত্যি করেছে ছেলে

usharalodesk
অক্টোবর ১৬, ২০২৩ ১২:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ক্রীড়া ডেস্ক:  বাবা মোহাম্মদ গাউস ছিলেন অটোরিকশাচালক। হায়দরাবাদের চারমিনার থেকে বানজারা হিলস ছুটে চলত তার অটো। অনেক কষ্টের রোজগার থেকে ছেলের জন্য বাঁচিয়ে রাখতেন ৭০ রুপি। অনুশীলনে যেতে-আসতে ওই টাকা খরচ করতেন মোহাম্মদ সিরাজ। বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে একদিন বড় ক্রিকেটার হবে। মাঠ মাতাবে ভারতের জার্সি গায়ে। অটোচালক বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে অনেক আগেই। নিজ দেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে রোহিত শর্মার দলের অন্যতম সদস্য এখন মোহাম্মদ সিরাজ।

শনিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৩০ হাজার দর্শকের সামনে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছেন সিরাজ। বল হাতে প্রথমে আবদুল্লাহ শফিককে ফেরানোর পর নিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের উইকেটও। এরপরই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের ইনিংস। ম্যাচে সাত উইকেটে জেতে ভারত। ম্যাচ শেষে সিরাজ বলেন, ‘সত্যি বলতে, কখনো ভাবিনি যে হায়দরাবাদের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উঠে এসে আমি বিশ্বকাপে খেলব।’

দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা সিরাজের জন্য ক্রিকেটার হওয়ার পথটা সহজ ছিল না। খেলাধুলার সরঞ্জাম জোগাড় করতে হিমশিম খেত তার পরিবার। বাবার স্বপ্ন পূরণে পরিশ্রম করে গেছেন সিরাজ। টেনিস বলে খেলার সুযোগ পেয়ে রাজ্য দলে শুরু। ২০১৫ সালে খেলেন রনজি ট্রফিতে। ২০১৭ সালে সুযোগ পান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলার। ভিত্তিমূল্য মাত্র ২০ লাখ রুপি থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ রুপিতে সিরাজকে দলে ভেড়ায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আইপিএলে দল পেয়ে বলেছিলেন বাবাকে আর অটো চালাতে দেবেন না তিনি।

ওই বছরের নভেম্বরে প্রথম ভারতের জার্সি গায়ে ওঠে সিরাজের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি ২০তে অভিষেক হয় তার। ২০১৯ সালের প্রথমদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গায়ে জড়ান ভারতের ওডিআই জার্সি। পরের বছর একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক। ওই সিরিজ খেলার সময় বাবাকে হারান সিরাজ। সেসময় করোনা মহামারির কারণে প্রটোকল ভেঙে আসতে পারেননি দেশে। বাবার মৃত্যুর খবর পাওয়া সিরাজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে সুযোগ পেয়ে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। বাবা যে স্বপ্ন দেখতেন ভারতের জার্সিতে মাঠ মাতাবেন সিরাজ।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। গ্রাম থেকে উঠে এসে ভারতের পেস বোলিংয়ে নেতৃত্ব দিলেও কখনো নিজের শেকড় ভুলে যাননি তিনি। এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালেও সিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শ্রীলংকাকে ৫০ রানে অলআউট করে ভারত। ফাইনালে ম্যাচসেরার পুরস্কারের টাকার পুরোটা দিয়ে দেন মাঠকর্মীদের।
বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ বল করেন সিরাজ। ৬.৩ বল করে ২৬ রান দিয়ে নেন এক উইকেট। পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭৬ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট।

ম্যাচ শেষে সিরাজ বলেন, ‘প্রত্যেকের খারপ সময় আসে, এর মানে এ নয় যে, সে খারাপ পারফরমার। আত্মবিশ্বাস আমাকে বোলিংয়ে সাহায্য করেছে। এটা বিশ্বকাপ, আমরা প্রতিটি ম্যাচ ধরে এগোতে চাই।’

ঊষার আলো-এসএ