মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী বাসচাপায় জাহেদুল ইসলাম শান্ত, তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও মেয়ে উম্মে তুরাইশা আহত হন।
এ দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ের দুই পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গুরুতর আহত হন শান্তর স্ত্রী। তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান শান্ত। হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছে তার মেয়ে তুরাইশা। আর তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বেড়িলাবাড়ি ঈদগাঁ মাঠে জানাজা শেষে শান্তকে দাফন করা হয়।জাহেদুল ইসলাম শান্ত লালপুর উপজেলার বেড়িলাবাড়ি গ্রামের জামতলা গ্রামের এজাহার আলীর ছেলে।
জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহী বাঘা উপজেলার বানিয়াপাড়ায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় বাবা, মেয়ে, স্ত্রী আহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহেদুল ইসলাম শান্ত বিকালে মারা যান।
নিহত জাহেদুল ইসলাম শান্তর ভাতিজি জামাই ফারুক হোসেন বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পরে জরুরিভিত্তিতে তাদের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এরপর বাবা-মেয়ে দুজনকেই নিবিড় পর্যবেক্ষণ সেন্টারে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। শান্তর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। বাবা মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়েছিল; কিন্তু শান্ত মারা যাওয়ার খবরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিষেধ করে দেওয়া হয়।
ফারুক হোসেন আরও বলেন, শান্তর মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়িতে এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তার মেয়ের এখানে চিকিৎসা চলবে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। শান্তর তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে স্বামীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি। তার শরীরের ডানপাশ অবশ হয়ে আছে। তার চিকিৎসাও এখানে চলছে। মেয়ে উম্মে তুরাইশার অবস্থা খুব ভালো বলা যাবে না।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মোটরসাইকেলে জাহেদুল ইসলাম শান্ত (৩০) তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে (২৭) সঙ্গে নিয়ে মেয়ে উম্মে তুরাইশার (৫) স্কুলে যাচ্ছিলেন। তারা বাঘা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের বাঘা পৌরসভার বানিয়াপাড়া নামক স্থানে পৌঁছলে বাঘা থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকাগামী সুপার সনি নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় বাবা-মেয়ে বাসের নিচে চাপা পড়েন। এতে বাবা ও মেয়ের শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় শান্তর স্ত্রী আহত হন।
বাঘা থানার ওসি আফম আছাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। বাসের চালক ও সহকারীরা পালিয়েছে। বাসটি জব্দ করা হয়েছে।
ঊষার আলো-এসএ