জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলে দুর্যোগ দিন দিন বাড়ছে। বেড়েছে লবণাক্ততাও। লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে উপকূলে নারীদের জরায়ুসহ বিভিন্ন রোগের হার পূর্বের চেয়ে তুলনামুলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার সকাল ১০ টায় জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালির গাঁতিদারপাড়া গ্রামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের আয়োজনে এবং ব্রেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড এর আর্থিক সহযোগিতায় দিন ব্যাপী ফ্রি স্ত্রীরোগ ও মাতৃস্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্প পরিচালিত হয়।
উক্ত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্ভোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ৯ নং বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জনাব মোঃ শহিদুল ইসল্মা। বিশেষ স্ত্রীরোগ ও মাতৃস্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্পে দিন ব্যাপী সেবা দেন ডাঃ শানজানা পারভীন ( এমবিবিএস ), আরএমও, ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, মারুফা জাহান, হেলথ এডুকেটর, লিডার্সের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট দীপক কুমার গাইন। এছাড়া এই বিশেষ স্ত্রীরোগ ও মাতৃস্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্পে আরো উপস্থিত ছিলেন লিডার্সের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ আলীম আল রাজী, অ্যাডভোকেসি অফিসার তমালিকা মল্লিক, লিডার্সের কর্মকর্তা জয়দেব জোদ্দার, ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল কো-অর্ডিনেটর শাহীন আহমেদ সহ আরো অনেকে।
উপকূলের নারীদের লবণ পানি পান করতে হয়, লবণ পানিতে গোসল করতে হয়। এছাড়া জীবন চালাতে উপকূলের নারীরা নদীতে মাছ ধরে এবং চিংড়ি ঘেরে শ্রমিক হিসাবে কাজ করছে। ফলে সারাদিন লবণ পানিতে থাকার কারনে বিভিন্ন বয়সী নারীদের স্ত্রী রোগ ও প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বহুবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া আরো বেড়েছে চর্ম জাতীয় রোগ। তাছাড়া এসব নারীদের নারী সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসা সেবা নিতে পুরুষ ডাক্তারের নিকট সবকিছু খুলে বলতে দ্বিধাবোধ করেন। ফলে সঠিক চিকিৎসা সেবা নিতে ব্যর্থ হন। তাই উপকূলীয় অঞ্চলে মাতৃস্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে এবং সরকারের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এই মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন যে সরকারের পাশাপাশি লিডার্স এই সুবিধাবঞ্চিত নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। উপকূলের নারীরা টাকার অভাবে, যাতায়াত সুবিধার অভাবে যারা বাইরে ডাক্তার দেখাতে যেতে পারেন না তাদের ফ্রি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে লিডার্সের এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এই মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় ১০০ রোগীকে বিনামূল্যে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধ প্রদান করা হয়।