ঊষার আলো রিপোর্ট : করোনার সংকটময় এই মুহূর্তে বাঙালির জীবনে এসেছে পহেলা বৈশাখ। বৈশাখের এই উৎসবে এবার নেই প্রাণের উন্মাদনা। তবুও রয়েছে আশা, সম্ভাবনার সূর্য তো সব সময়ই উদিত থাকে বাংলার আকাশে। কাজেই এবারের পহেলা বৈশাখও নিয়ে আসুক, কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে চলার সুদিন, এমনটাই প্রত্যাশা সংস্কৃতিসেবীদের।
নতুন দিনের আবাহন। রক্তিম আভায় আলোকিত চরাচর। প্রকৃতির নানা আয়োজন। কথা ছিল বসন্তের বেশে হিল্লোলের পুষ্পদল নিয়ে আসবে বৈশাখ। এসেছে ঠিকই, তবুও মানুষের মুখ আজ ম্লান। একাকী গৃহ কোনো নয়, আজতো সম্মিলিত মানুষের একাত্ম হবার দিন। ঢাক-ঢোলের বাজনায় নিজেদের অস্তিত্ব ও শেকড়ের ফেরার উপলক্ষ। না, কিছুই হচ্ছে না। কেমন এক স্তব্ধ সময়।
গৃহ কোনো আত্মানুসন্ধানের নতুন এক রক্ত দীপময় আয়নার সামনে করোটি হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে মানুষ। সম্মিলিত মানুষের যেন আজ নেই কিছুই করার। বাঙালির বৈশাখে আজ কঠিন অর্গল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অদৃশ্য এক শক্র। তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধই এখন লড়াই।
উৎসব বাঙালি জীবনে মুকুট মণির মতো। তবে, দ্বিধাহীন মহামিলনের উৎসবে আজ নেই মানুষ। তবে কি থমকে গেল বাঙালির হাজার বছর ধরে চলা সাংস্কৃতিক অভিযাত্রা?
নাট্যকার ও গবেষক ড.সাইমন জাকারিয়া বলেছেন, ‘ঐতিহ্যের চর্চা কিন্তু শুরু হয় একেকটি পরিবারের ভেতরে ব্যক্তি পর্যায় থেকে। সে ব্যক্তি পর্যায়ের চর্চা এবং সাধনা সংস্কৃতিতে এখনও বহমান রয়েছে। করোনাকালে ঘরবন্দি থাকলেও আমাদের বৈশাখের যে খাদ্যাভাস, বৈশাখের যে বস্ত্র বুনন, বৈশাখের যে শুভেচ্ছা বিনিময় সেগুলো কিন্তু রয়ে গেছে।’
কখনও শরৎ, কখনও অগ্রহায়ণ বারবার বদলেছে বাঙালির নববর্ষ। দিকহারা হয়নি কখনও উৎসবের বাংলা।
মানুষের হৃদয়ে যেন মানুষেরই ছায়া বিরাজমান থাকে, বৈশাখের পহেলা দিন থেকে একটুকু সংগীতের মতো বেজে চলুক প্রতিটি প্রাণে।
(ঊষার আলো- এম.এইচ)