UsharAlo logo
রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বড় ব্যবধানে জয় পেল আফগানরা, সিরিজ সেরা লিটন

koushikkln
ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২ ৭:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ক্রীড়া প্রতিবেদক : সিরিজের দুটি ম্যাচে দূর্দান্ত জয়ের পর আফগানিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যাওয়ায় হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্নটা অপূর্ণই রয়ে গেলো বাংলাদেশের। সিরিজ সেরা হয়েছেন লিটন দাস।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৪৬.৫ ওভারে মাত্র ১৯২ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। সহজ লক্ষ্য ৩ উইকেট হারিয়ে ৫৯ বল আগেই টপকে যায় আফগানিস্তান। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ শেষ করলো ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে।

বাংলাদেশ দুই ওয়ানডে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলেও সুপার লিগ-যুগে প্রতিটি ম্যাচেরই সমান গুরুত্ব। তাই ‘ডেড রাবার’ কথাটার কার্যকারিতা নেই ওয়ানডে দুনিয়ায়। তারপরেও ডেড রাবারের মতো গাছাড়া ভাব দেখিয়ে সিরিজের শেষ ম্যাচ হেরে গেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তান জিতেছে উইকেটের বড় ব্যবধানে।

১৯৩ রানের মামুলি লক্ষ্যে আফগানিস্তান শুরু থেকেই ছিল আগ্রাসী। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রিয়াজ হাসান শুরুতে হাত খুলে খেলছিলেন। ১৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে আসে সাফল্য। তার বলে পরাস্ত হওয়া রিয়াজ হাসান ক্রিজের সামান্যতম বাইরে ছিলেন। প্রথম দফায় বেলস ফেলতে পারেননি মুশফিক। ততক্ষণে রিয়াজ ভেতরে ঢুকতে পারেননি। বাইরেই ছিল পা। মুশফিক দ্বিতীয় চেষ্টায় ঠিকই স্টাম্পড করেছেন রিয়াজকে। তাতে ভাঙে ৭৯ রানের ওপেনিং জুটি। রিয়াজ ৪৯ বলে ৩৫ রান করে ফিরেছেন।

তবে অন্যপ্রান্ত আগলে খেলে জয় বের করে আনেন গুরবাজ। এই সময় তিনবার ক্যাচও তুলেছিলেন। কিন্তু কোনোবারই তার ক্যাচ নিতে পারেননি কেউ। পরে এই ব্যাটারই আগ্রাসী ভঙ্গিতে ব্যাট চালিয়ে ছিনিয়ে আনেন জয়। সেঞ্চুরি পূরণ করে দলকে জিতিয়ে তবে মাঠ ছেড়েছেন এই ওপেনার। খেলেছেন হার না মানা ১০৬ রানের ইনিংস। ১১০ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৭ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায়।

মাঝে জোড়া ধাক্কায় মেহেদী হাসান মিরাজ যা একটু হারের ব্যবধান কামিয়েছে। রহমত শাহ ৪৭ রানে ও হাশমতউল্লাহ শহিদি ২ রানে আউট হন। মিরাজ ৮.১ ৩৭ রান খরচায় নেন ২ উইকেট। সাকিব ৪৭ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট।
চট্টগ্রামে আজ ৫০তম ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলেন লিটন দাস। মাইলফলকের ম্যাচটা হাফসেঞ্চুরিতেও রাঙিয়েছিলেন। শুরুর জড়তা কাটিয়ে এমন ছন্দ তুলেছিলেন, মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরিটাও বুঝি পেয়ে যাবেন। কিন্তু ৮৬ রানে ব্যাট করতে থাকা ব্যাটার ফেরার পরেই এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং। বাকিরা কোনও ভূমিকাই রাখতে পারেননি! লিটনের ১১৩ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার।

তামিমের বিদায়ের পর মূলত লিটনের ব্যাটেই জড়তা কাটিয়ে উঠা বাংলাদেশের। এই সময় তাকে সঙ্গ দেন সাকিবও। কিন্তু সফট ডিসমিসালে ইনিংস লম্বা হয়নি তার। অথচ এক পর্যায়ে লিটনের যোগ্য সঙ্গী-ই হয়ে উঠেছিলেন। ৪৩ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর ৬১ রান যোগ করে এই জুটি। শতরানও ছাড়ায় তাদের কল্যাণে। পোক্ত হয়ে ওঠার পথেই সাকিব বোল্ড হন ওমারজাইয়ের বলে। তার ৩৬ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার।

এমন পরিস্থিতিতে প্রতিরোধ গড়ার কথা থাকলেও মুশফিক চাপ বাড়িয়ে দেন আরও। রশিদ খানের বলে ২৭তম ওভারে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন। প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি এই সিরিজে অভিষেক করা ইয়াসিরও। রশিদের পরের ওভারেই গুলবাদিনের ক্যাচে পরিণত হয়েছেন। মুশফিক করেছেন ৭ রান আর ইয়াসির মাত্র ১।

তখন শুধু একপ্রান্ত আগলে থাকা লিটনের ব্যাটেই এগিয়ে চলতে থাকে বাংলাদেশ। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির বার্তা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ ৮৬ রানে নবীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়েছেন গুলবাদিন নাইবের। তার বিদায়ের পরেই দিশা হারায় বাংলাদেশের ব্যাটিং। যখন নাকি রান উঠানোর দিকেই মনোযোগ থাকার কথা, তখন ব্যাটাররা শুধু আসা-যাওয়ার খেলায় মেতে ওঠেন। প্রথম ম্যাচ জয়ের নায়ক আফিফ দলীয় ১৬০ রানে নবীর বলে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন। করেছেন মাত্র ৫। তার মতো ব্যর্থ ছিলেন মিরাজও। রান আউটে অফস্পিনিং অলরাউন্ডার ফিরেছেন ৬ রানে।

রশিদের বলে তাসকিন লেগ বিফোরে ফিরলে পতন হয় অষ্টম উইকেটের। অথচ তখনও একপ্রান্ত আগলে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বাকি দুই ব্যাটার শরিফুল ও মোস্তাফিজুর দ্রুত ফিরে গেলে দুইশোর আগেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। শেষের দুই ব্যাটারই ফিরেছেন রান আউটে! না হলে ইনিংসটা আরও বড় হওয়ার সুযোগ ছিল। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থাকেন ২৯ রানে।
আফগানদের দুই স্পিনারই ইনিংসের দৃশ্য বদলে দিয়েছেন। রশিদ খান ৩৭ রানে নেন ৩ উইকেট। ২৯ রানে দুটি নেন নবী। একটি করে নিয়েছেন ফজল হক ফারুকী ও আজমতউল্লাহ ওমারজাই।