UsharAlo logo
বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভয়াবহ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে সরকার: মির্জা ফখরুল

usharalodesk
জুন ১, ২০২৩ ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : নির্বাচনি মাঠ থেকে বিরোধী দলের নেতাদের সরিয়ে দিতে সরকার ভয়াবহ মহাপরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘মৃত্যু যখন ঘনিয়ে আসে, যখন আর কোনো আশা থাকে না, তখন অনেকেই চেষ্টা করেন কোনোরকমে কোনো কিছু ধরে যদি টিকে থাকা যায়।

বিরোধী দলের নেতাদের সাজা দেওয়ার রায় হচ্ছে তাদের সেই পরিকল্পনার। জানতে পেরেছি, সাড়ে ১৩শ মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে, দ্রুত শেষ করে নেতাদের সাজা দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। যাতে আগামী নির্বাচনের আগে নেতাদের কারাগারে পাঠনো যায়, নির্বাচনে তারা প্রতিপক্ষ ছাড়া খালি মাঠে গোল দিতে পারে। সব হচ্ছে রাজনৈতিক মামলা।’

বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মামলার রায় দিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরোধীদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আবারও একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। একাই খেলার মাঠে খেলবেন এবং গোল দিবেন। এখনো সময় আছে, এসব খেলাধুলা বাদ দেন। উলটাপালটা বুঝিয়ে, প্রতারণা না করে এখনো সময় আছে। ওইসব পথ ছেড়ে সোজা পথে আসুন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের মামলাগুলো চালু করা হয়েছে। আত্মপক্ষের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে। শুনে অবাক হবেন, তাদের রাত পর্যন্ত সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালতে কথা বলতে চাইলে তাদের ওপর সরকারি দলের আইনজীবীরা হামলা করে এবং পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালায়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে সরকার নোংরা ষড়যন্ত্র করছে।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রীকে সাজা দেওয়ার রায়ের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উদ্দেশ্য একটাই-সাজা দিয়ে বিএনপি নেতাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখা। অথচ একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও

মোহাম্মদ নাসিমকে (প্রয়াত) খালাস দেওয়া হয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। অথচ তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সারা দেশে বিএনপির ৭ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ১২ দিনে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৫২টি নতুন মামলা হয়েছে। এসব মামলার আসামি সাড়ে ৫ হাজার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।

আ.লীগ ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না : এর আগে সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কখনো গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। কারণ, সরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে বল প্রয়োগ করে ভিন্ন মতপ্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে। ক্ষুণ্ন করেছে ভোটের অধিকার।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, সে প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আওয়ামী লীগ বলছে, যুক্তরাষ্ট্র তো অংশগ্রহণমূলক ভোটের কথা বলেনি। এতে তারা মজা পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সংবিধান অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তখনই হবে, যখন তা অংশগ্রহণমূলক হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে তিনি বলেন, এতদিন শুধু সরকারের দমনপীড়নের শিকার বা ভুক্তভোগীরা কথা বলতেন আর সাংবাদিকদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব ছিল, তা প্রকাশ করতেন।

এখন সারা বিশ্ব বলছে যে বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করা ও কথা বলার সুযোগ নেই। এখন শুধু আমাদের বলতে হয় না। যারা মুক্তমনা, তারা সবাই বলছেন। ডিইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর

সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল হাই সিকদার, সিনিয়র সাংবাদিক এমএ আজিজ, রুহুল আমিন গাজী, কামাল উদ্দিন সবুজ, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের নেতা বাছির জামাল, রাশেদুল হক, ডিএম আমিরুল ইসলাম ওমরসহ সাবেক ও বর্তমান নেতারা।

ঊষার আলো-এসএ