ঊষার আলো রিপোর্ট : ২২ দিন অলস সময় কাটানোর পর ইলিশ ধরতে জাল-নৌকা নিয়ে প্রস্তুত চাঁদপুরের অর্ধলক্ষ জেলে। কর্মসূচি সফল হওয়ায় আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে মৎস্য বিভাগ।
আজ রাত ১২টায় ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষে হচ্ছে।
এ সময়ে জাল-নৌকা মেরামত কাজটাও সেরে নিয়েছেন তারা। এখন তারা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার আশায় নদীতে নামতে পুরোপুরি প্রস্তুত।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী জানান, ১৩ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২১ দিন জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে শুরু করে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স ৬০২টি অভিযান পরিচালনা করে। এসব অভিযানে গ্রেফতার হন ২০০ জেলে। তাদের মধ্যে ১৫৮ জেলেকে টাস্কফোর্সে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন এবং ৪২ জেলেকে ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ ছাড়াও পদির্শন করা হয় ১৮টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ৩৩৪ মাছঘাট, ১৮৯২ মৎস্য আড়ত ও ৬৪১ মাছ বাজার। জব্দ করা হয় ২.৭৩১ টন ইলিশ, সাড়ে ১৭ লাখ মিটার কারেন্টজাল, এসব ঘটনায় মামলা হয় ২৩৯টি। জব্দ মাছ বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তালিকাভুক্ত জেলেদের সরকারিভাবে চাল সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এবার অভিযান ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।’
চাঁদপুর নৌ থানার ওসি এইচএম ইকবাল বলেন, ‘টাস্কফোর্সের সহযোগিতায় নৌ পুলিশ গত ২১ দিনে ১৭২ জেলেকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে ১১৯ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৩৪ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়। এ ছাড়া ১৯ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘অভিযানে জব্দ হয় ১৮ লাখ ৩২ হাজার ৭০০ মিটার কারেন্টজাল, ৬ হাজার ৩২৬ কেজি ইলিশ এবং ৪৯টি মাছ ধরার নৌকা। এর মধ্যে ৭টি নৌকা থানা হেফাজতে, ২৭টি নৌকা ঘটনাস্থলে অকার্যকর এবং ১৫টি মৎস্য বিভাগের হেফাজতে দেওয়া হয়।’
গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য দেশের কয়েকটি অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। ৪ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে আবারও ইলিশ আহরণে নামবে জেলার অর্ধলক্ষাধিক জেলে।
ঊষার আলো-এসএ