মণিরামপুর প্রতিনিধি : এক ছেলেকে রেখে অনেক আগে মারা গেছেন রনিবালা মন্ডলের (৮০) স্বামী কিরণ মন্ডল। ছেলে নির্মল মন্ডলও মারা গেছেন ১০-১২ বছর আগে। স্ত্রী পূর্ণিমা মন্ডল এবং একমাত্র ছেলে অনুপ মন্ডলকে রেখে ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে লাশ হয়ে ফেরেন তিনি। শাশুড়ি ও ছেলেকে নিয়ে সংসারের হাল ধরেন পূর্ণিমা মন্ডল। তিন বছর আগে অসুস্থ হয়ে তিনিও ইহলোক ত্যাগ করেন। শুরু হয় নাতি অনুপকে নিয়ে বৃদ্ধা রনিবালার কষ্টের সাগর পাড়ি দেওয়া। অন্যের দ্বারে চেয়েচিন্তে পেট চলত তাদের দু’জনের। নাতি অনুপের বয়স এখন ১৪। সেও দাদিকে ফেলে মামা বাড়ি উঠেছে। একেএকে সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব রনি বালা। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়ায় শক্তি হারিয়েছেন কিছু করার। পাড়ার অন্যের হাড়ির ভাত এখন তার সম্বল। রনিবালার বাড়ি মণিরামপুরের হরিদাসকাঠি ইউপির লেবুগাতি গ্রামে। কষ্ট লাঘবে তাকে দুই মাসের নিত্যপণ্য সামগ্রী কিনে দিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রনব বিশ্বাস। সাথে দিয়েছেন নতুন কাপড়। রোববার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে স্থানীয় হাজিরহাট মোড়ে বৃদ্ধাকে ডেকে ৩০ কেজি চাল, একটি শাড়ি, একটি পেটিকোট, দুই কেজি ভোজ্যতেল, পাঁচ কেজি আটা, চার কেজি ডালসহ অন্যান্য সামগ্রী কিনে দেন মেম্বর। দুই মাসের খোরাকির চিন্তা দূর হওয়ায় খুশি রনিবালা। তিনি বলেন, প্রনব সবসময় আমার খেয়াল রাখে। ঘরে খাবার না থাকলি ওর বাড়ি চলে যাই। মেম্বর ভাল মানুষ। মেম্বর প্রনব বিশ্বাস বলেন, স্বামী, ছেলে ও পুত্রবধূ হারিয়ে একমাত্র নাতি অনুপকে সাথে নিয়ে এরওর দুয়ারে ঘুরে দিন যায় রনিবালার। বয়স্ক ভাতার কার্ড আছে। কিন্তু সেই টাকা হাতে পাননা তিনি। টাকা তুলে আনলে সেগুলো নিয়ে মামার বাড়ি চলে যায় অনুপ। দাদিকে দেয় না।
‘সপ্তাহে দুই-তিন দিন আমার বাড়িতে আহার জোটে রনি বালার। তাকে দুই মাসের খোরাকি দিয়েছি। যে কোন প্রয়োজনে আমি তার পাশে আছি,’ বলছিলেন ইউপি সদস্য প্রনব। টানা ১০ বছর জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন প্রনব বিশ্বাস। এই সময়ে তিনি ওয়ার্ডে অনেকের মাঝে বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বিতরণ করেছেন বিনা টাকায়। স্থানীয়দের কাছে সৎ মেম্বর হিসেবে পরিচিত তিনি।
(ঊষার আলো-আরএম)