UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাগুরা শিল্পকলায় অনুদান বিতরণে কমিশন বাণিজ্য: ফোন কল ফাঁস

usharalodesk
এপ্রিল ২০, ২০২১ ১০:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : মাগুরা জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে দুঃস্থ ও অসচ্ছল শিল্পীদের জন্য প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রায় অর্ধ কোটি টাকার অনুদান বিতরণে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর এ বিষয়ে আরও নতুন-নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
গত ১৫ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি সকলের নজরে আসে। মাগুরা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর একটি চক্র ৫০ ভাগ কমিশনের বিনিময়ে অশিল্পীদের তালিকায় নাম উঠিয়েছেন মর্মে একটি অডিও ইতিমধ্যে সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ফলে প্রকৃত শিল্পীরা অধিকাংশই বঞ্চিত হওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকৃত দুঃস্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের নাম জমা দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি সার্কুলার জারী করা হয়েছে।
ওই অডিও বার্তায় একজন অনুদানপ্রাপ্ত নারীকে বলতে শোনা যায়, সদরের কুচিয়ামোড়া গ্রামের ওই পরিবারের ৬ জনকে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ৬০ হাজার টাকা প্রদানের বিপরীতে শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত শিক্ষক অজিত রায় ও স্থানীয় সংগীত শিক্ষক সুকুমার পালকে প্রাপ্ত টাকার অর্ধেক অর্থাৎ ৩০ হাজার টাকা দেয়ার চুক্তি হয়। এ চুক্তিমোতাবেক ওই পরিবারটির ৬ জন সদস্য চেক ভাঙ্গিয়ে ৬০ হাজার টাকা পায়। এ সময় তারা ওই দুই সংগীত শিক্ষকের হাতে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন ৫ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও টাকা না দিয়েই চলে যাওয়ায় এ নিয়ে  তাদের মধ্যে মনমালিণ্য দেখা দিয়েছে। জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সহ-সধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ওই চক্রটি টাকার বিনিময়ে অশিল্পীদের নাম সংগ্রহ করে শিল্পী হিসেবে টাকা পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে বলে অডিও বার্তায় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীকে ইঙ্গিত করে ওই ব্যক্তি জানান, মূল ঝামেলা তৈরী করেছে বিশ্ব। সেই প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে সুকুমার পাল ও অজিত রায়ের মাধ্যমে অশিল্পীদের নাম সংগ্রহ করে টাকা বিতরণের ব্যবস্থা করেছে। ফলে প্রকৃত শিল্পীদের স্থানে অশিল্পীদের নামই বেশী দেখা যায়। জেলার প্রথিতযশা ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের স্থানে ৪৩৮ জনের মধ্যে ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার মধ্যে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর পরিবারের ১৫ জনসহ অসংখ্য অখ্যাত অজ্ঞাত লোকজনের নাম শিল্পী তালিকায় থাকায় প্রকৃত শিল্পীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শিল্পীরা এ  চক্রটির হাত থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
এদিকে কামরুল ইসলাম নামে মাগুরা জেলা শিল্পকলা একজন একাডেমীর একজন সাউন্ড অপারেটর বিভিন্ন সময়ে শিল্পীদের নামের তালিকা করার সময় প্রকৃত শিল্পীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন একাধিক শিল্পী। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীর তালিকায় নিজের নাম আছে কিনা দেখতে চাইলে মোছা: সামছুন্নাহার (রানী হায়দার) নামে একজন বাউল শিল্পীর সাথে দুর্ব্যবহার করে কামরুল ইসলাম শিল্পকলায় যেতে নিষেধ করেছেন। যেটির একটি ভিডিও ডকুমেন্ট শিল্পীদের মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার জসিম উদ্দিন জানান, কেউ যদি টাকার বিনিময়ে শিল্পীর তালিকা তৈরী করে থাকেন আর তা যদি প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসন অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি। আর শিল্পকলায় শিল্পীদের সাথে দুর্ববহার করা হলে তার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জেলা প্রশাসনের ঘোষিত ফরম্যাট অনুযায়ী সকল শিল্পীদের সহায়তার জন্য আবেদন করতে অনুরোধ জানান।

(ঊষার আলো-এমএনএস)