সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো এবং জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রধান কারণ হলো রাজনৈতিক প্রভাবের ভিত্তিতে পক্ষপাতদুষ্ট মেগা প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিগত সরকারের সময় নীতিহীন অর্থনীতির একটি কাঠামো গড়ে উঠেছে, যা স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থায় রূপ নিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) পরিকল্পনা কমিশনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বৈঠকে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির কাছে একাধিক সুপারিশ পেশ করা হয়।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অংশের বিপরীতে বিপুল অর্থ পাচার হয়ে গেছে, যা উন্নয়নের মূল বয়ানকে বিকৃত করেছে। এ ধরনের অনৈতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়ে দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করেছে। তবে, বর্তমানে এই বৃত্ত ভাঙার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। তিনি সতর্ক করে দেন যে, বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলবে, এবং সংস্কারগুলোর পরিধি ও গতি নির্ধারণ করবে।
বৈঠকে ইআরএফের সদস্যরা বিশেষত স্বাস্থ্য খাতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান দুর্নীতি বন্ধের জন্য শ্বেতপত্র কমিটিকে সুপারিশ তুলে ধরেন।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হাসান বলেন, কমিটি এখন গভীরতা বিবেচনায় সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং জবাবদিহিতার কাঠামোকে মজবুত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি প্রণয়ন করতে কাজ করছে।
অন্যদিকে, কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান উল্লেখ করেন যে, দেশের সংকটের মূল উৎস ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন, যা ক্রোনি ক্যাপিটালিজম বা বিশেষ স্বার্থভিত্তিক পুঁজিবাদের উত্থান ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক অর্থনীতির স্বার্থে রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীদের একটি জোট গঠিত হয়েছে, যারা প্রকৃত সংস্কার প্রতিহত করে নিজেদের স্বার্থে উন্নয়ন বয়ান প্রতিষ্ঠা করেছে।