UsharAlo logo
শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেরে রাবি শিক্ষার্থীর কানের পর্দা ফাটালেন ২ ছাত্রলীগ নেতা

usharalodesk
আগস্ট ৫, ২০২৩ ৬:২৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে মেরে কানের পর্দা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের অতিথিকক্ষে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম। তিনি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শেরেবাংলা হলের ১২৩ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং হল ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক। তবে বর্তমানে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তিনি।

অপরদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের দুই নেতা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েম জেমস ও সৈয়দ আমীর আলী হল শাখা ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক উপসম্পাদক আল আমিন। আল আমিন শেরেবাংলা হলে অবৈধভাবে থাকেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

প্রক্টরকে দেওয়া নজরুলের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, রাতে শেরেবাংলা হলের রিডিংরুমে পড়ছিলেন তিনি। পাশেই উচ্চৈস্বরে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন আল আমিন। জোরে কথা বলতে নিষেধ করায় আল আমিন তার ওপর চড়াও হন। দুজনের তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তাকে হুমকি দিয়ে আল আমিন বলেন, তুই জানিস আমি তোর কি অবস্থা করতে পারি? এরপর আল আমিন সেখানে জেমসকে ডেকে নিয়ে আসেন। দুজনে মিলে নজরুলকে শেরেবাংলা হলের অতিথিকক্ষে নিয়ে দরজা বন্ধ করে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে নজরুল মাটিতে পড়ে যান এবং তার কান দিয়ে রক্ত বের হয়। এ বিষয়ে কোথাও অভিযোগ জানালে অথবা কাউকে বললে তাকে আবারও মারা হবে বলে হুমকি দিয়ে তারা চলে যান।

নজরুল বলেন, আমার বাম কানে আগে থেকেই সমস্যা ছিল। সেই কানেই আঘাত করার ফলে প্রচুর রক্তপাত হয় ও আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। পরদিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক জানান, আমার কানের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা করাতে হবে। বর্তমানে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং শারীরিকভাবে শ্রবণ অনুভ‚তিহীন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

অভিযোগের বিষয়ে আল আমিন বলেন, সেদিন আমাদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে সেটি জেমস ভাই ও প্রভোস্ট স্যার মিলে সমাধান করে দিয়েছেন। এখন তিনি তৃতীয় কোনো পক্ষের প্ররোচনায় এই অভিযোগটি করেছে। জেমস বলেন, সেদিন আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে দুজনের মধ্যে মিটমাট করে দিই। সেখানে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। পরদিন হল প্রভোস্ট স্যার তাদের ডেকে মীমাংসা করে দেন।

প্রাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দুপক্ষই আমার কাছে লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনা জানার পর আমি নিজেই দুপক্ষকে ডেকে সমাধান করে দিয়েছি। কিন্তু সে সময় নজরুল আমাকে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জানায়নি। তবে হল প্রাধ্যক্ষ হিসাবে তার নিরাপত্তার সব ধরনের চেষ্টা করব। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি। হলের নিরাপত্তা কর্মীদেরও নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হবে। আর অভিযুক্ত আল আমিন যদি আমার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী না হয়ে থাকে তাহলে তাকেও হল থেকে বের করার ব্যবস্থা করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, এটি হলের বিষয়-তাই হল প্রাধ্যক্ষ সমাধান করবেন। আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে এলে আমি নজরুলকে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে তা জমা দিতে বলেছি।

ঊষার আলো-এসএ