আরিফুর রহমান, বাগেরহাট: পূর্নিমার তিথিতে সমুদ্রে পানির চাপ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে বাগেরহাটের নিম্মাঞ্চল মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় হুমকীর মুখে পড়েছে বেড়ীবাধ। অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে দিনে দু’বার ভাসছে মোড়েলগঞ্জ পৌর শহরসহ ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুই শতাধিক মৎস্য ঘেরের বেড়ি ভেঙ্গে প্রবেশ করছে অতিরিক্ত পানি। ভেঙ্গে গেছে কাঁচা পাকা রাস্তা।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেলা ১১টা মোড়েলগঞ্জ শহরের কাপুড়িয়াপট্টি সড়ক, কাচা বাজার, কেজি স্কুল সড়ক, ফেরীঘাট সংলগ্ন কালাচাঁদ মাজার এলাকা, সানকিভাঙ্গা, বারইখালী গ্রাম প্লাবিত হয়ে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২দিন ধরে দুপুরের রান্না হচ্ছে না অনেক বাড়িতে। এ ছাড়াও উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে ২০ গ্রাম। নদীর তীরবর্তী বহরবুনিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বহরবুনিয়া, উত্তর ফুলহাতা, ঘষিয়াখালী, জিউধরার পালেরখন্ড, কাকরাতলী, শনিরজোড়, সোনাতলা, চন্দনতলা, জিউধরা, হোগলাবুনিয়ার বদনীভাঙ্গা, পাঠামারা এলাকার ২ শতাধিক মাছের ঘের পানির নিচে। মৎস্য ঘেরের বেড়ি ভেঙ্গে উপচে পানি প্রবেশ করে বেরিয়ে গেছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে শত শত ঘের ব্যবসায়ীরা বলে জানিয়েছেন বহরবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন তালুকদার ও জিউধরা ইউপি চেযারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা।
এদিকে পঞ্চকরণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার জানান, স্থানীয় সোনাখালী স্লুইজগেট হয়ে দেবরাজের ৭ কিলোমিটার মিনি বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। পানির প্রবাহ আর ২/১দিন থাকলে বেড়ীবাধ ভেঙ্গে যাবে। যে কোন সময় পানির চাপে বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে গিয়ে গ্রামজুড়ে প্রবেশ করতে পারে অতিরিক্ত পানি। বিষয়টি তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আকরামুজ্জামান জানান, বদনীভাঙ্গার বিএস রতমতিয়া দাখিল মাদ্রাসা হয়ে সেকেন্দার আলী দোকান পর্যন্ত ১ কিলোমিটার ইট স্রোলিং রাস্তা ও মুসলিম ইটভাটা হয়ে পাঠামারা হাজ্বিগঞ্জের ২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ভেঙ্গে পড়েছে।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। সংশ্নিট এলাকায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সংশ্লিষ্ট পানগুছি নদী উত্তাল হয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ঘাটসহ মৎস্য ঘেরগুলোর খোঁজ খবর নিয়ে তালিকা করার জন্য মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি রাখা হয়েছে উপজেলা প্রশাসন কে।