UsharAlo logo
বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতনের পর স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করলেন স্বামী!

usharalodesk
জুলাই ৩, ২০২১ ৬:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বারাইপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে টয়লেটের ব্রাশ দিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন তার স্বামী। এই ঘটনায় নির্যাতিত স্ত্রী নিজে বাদী হয়ে স্বামী ও দেবরের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

পরে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় গতকাল শনিবার ভোরে লালমাই থানা পুলিশ স্বামীকে গ্রেফতার করেছে।

জানা গেছে, ১৯ বছর পূর্বে উপজেলার ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের বারাইপুর গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মো. হাসানের (৪০) সঙ্গে বিয়ে হয় ওই নারীর। তাদের সংসারে ১ পুত্র সন্তান (১১) ও ১ কন্যা সন্তান (৫) রয়েছে। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি থেকে একাধিকবার আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন হাসান।

মো. হাসান পেশায় একজন পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ও সম্প্রতি তিনি ব্যবসার জন্য শ্বশুর বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দিতে স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করেন। তবে যৌতুকের টাকা এনে দিতে অসম্মতি জানানোর ফলে গত ১৯ জুন বিকালে স্বামী হাসান ও দেবর হোসাইন সেই গৃহবধূকে টয়লেট পরিষ্কারে ব্যবহৃত ব্রাশ দিয়ে শারীরিক নির্যাতন শেষে মাথার চুল ন্যাড়া করে দেয়। পরবর্তীতে আবার ২৪ জুন বিকালে দ্বিতীয় দফায় নির্যাতন করায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

গত ৩০ জুন দুপুরে মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক নিজ কার্যালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধানের জন্য সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। হাসান সংসার করতে না চাওয়ায় ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ২ লাখ টাকা নিয়ে স্ত্রী স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দিতে হবে। তবে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় ওই নারী সেই সিদ্ধান্ত মানেননি।

গত ২ জুলাই বিকালে মাকে সঙ্গে নিয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ লালমাই থানায় যান। লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ নির্যাতিত নারীর মুখ থেকে বিস্তারিত শুনেন ও প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে ভিকটিমের লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। আজ শনিবার ভোরে লালমাই থানাধীন ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম সেই স্বামীকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেন।

নির্যাতিত গৃহবধূ জানান, ভুলইন দক্ষিণের চেয়ারম্যান সালিশ বৈঠক করে দুই লাখ টাকায় ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত দেন। তবে শারীরিক নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় আমি সেই সিদ্ধান্ত মানিনি। কাজে থানায় মামলা করেছি।

লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, গৃহবধূকে নির্যাতন এবং মাথা ন্যাড়া করার বর্বর ঘটনায় পাষণ্ড স্বামীকে গ্রেফতারের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

(ঊষার আলো-এফএসপি)