UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রহমতপুর কল্যাণ ট্রাস্টের বিপুল অর্থ সম্পদের উৎস অনুসন্ধানে মাঠে দুদক

koushikkln
অক্টোবর ১০, ২০২২ ৯:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : বাগেরহাটের রহমতপুর কল্যাণ ট্রাস্টের সাইদুর রহমান ওরফে হাজী সাইদুরের বিপুল অর্থসম্পদের উৎস অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুদক। অনৈতিক ভাবে অর্জিত বিপুল অর্থসম্পদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এলাকাবাসী প্রেরিত আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষের পক্ষ থেকে নির্যাতন নিপিড়নের অভিযোগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে প্রতিকারের দাবিতে আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের দারে দারে দৌড়র ঝাপ শুরু করেছে সাইদুর রাহমান। তবে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে প্রভাবমুক্ত থেকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগ রয়েছে, বাগেরহাটের চিতলমারি উপজেলার রহমতপুর কল্যাণ ট্রাস্টের অন্তরালে মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে অনৈতিক পন্থায় বিপুল পরিমান অর্থসম্পদ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। চাকুরি দেয়ার নামে বাগেরহাট, খুলনা ও ঢাকার বহুলোকের কাছ থেকে প অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ঢাকা, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোটি কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গড়ে তুলেছেন সাইদুর রহমান। শুধু তাই নয়, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের নামে কয়েকশ’ বিঘা সম্পত্তি কেনা হয়েছে।

প্রতারিত অনেকেই অর্থ ফেরত এবং তদন্তপুর্বক সীমাহীন এই দুর্নীতির বিচারের দাবিতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন জানিয়েছেন। এর মধ্যে এনবিআরের চেয়রাম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই, এনএসআইসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে আবেদন করা হয়েছে। ডাকযোগে প্রেরিত এই আবেদনে এলাকাবাসী সাইদুরের বিপুল পরিমান অবৈধ সম্পদের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে ঢাকার নিউ বেইলি রোডে ইস্কাটন রোডে দুটি এ্যাপার্টমেন্ট, বাড্ডায় একটি ৭তলা ভবন ও দুই বিঘা জমি, নারিন্দায় একটি এ্যাপার্টমেন্ট, নরসিংদিতে ১০ বিঘা জমি, বাগেরহাটের চিতলমারিতে কয়েকটি ভবন এবং রহমতপুরে প্রায় ১০০ বিঘা জমির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষের পক্ষ থেকে সাইদুর রহমানকে হিন্দু নির্যাতনকারী, সম্পদ লুণ্ঠনকারী ও ভুমিদস্যু হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রতিকার চেয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করা হয়েছে। বিদেশি দুতাবাসেও বিষয়টি জানিয়েছেন সংখ্যালঘুরা। আবেদনে সাইদুর রহমান সম্পর্কে বলা হয়েছে. গঙ্গাচনা এলাকার অসহায় গরীব অনেক হিন্দুপরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি জোর করে লিখে নিয়েছেন। এব্যাপারে চিতলমারির রহমতপুর এলাকার হিন্দু স¤প্রদায়ের সদস্য গোবিন্দ মন্ডল জানান, কয়েকবার সাইদুর রহমানের দুর্নীতি আর হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন মহলে বিষয়টি জানানোও হয়েছে। তবে কোন লাভ হয়নি। তবে সবকিছু ম্যানেজ করে দিব্যি বহল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাইদুর রহমান। আমরা অবিলম্বে তার অপকর্মের তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তুমলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় কলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাদশা মিয়া বলেন, সাইদুর হাজী কারোর জমি ফাঁকি দিয়েছে তা আমার জানা নেই। এমন কোন অভিযোগ তার কাছে আসেনি। তিনি এলাকার মুসলমানের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি সম্প্রতি ক্রয় করেননি। তাহলে জোর জবরদস্তি করার প্রশ্নই আসে না। তবে সাইদুর গত ২০ বছর আগে কিছু জমি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ক্রয় করেন। তখন তার বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগ আসেনি। তিনি কল্যাণ ট্রাস্ট পরিাচলনা করেন। কিভাবে করেন তা আমার জানা নেই। তবে কল্যাণ ট্রাস্ট নিয়ে এলাকার কেউ তার কাছে অভিযোগ করেননি বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে সাইদুর রহমান ওরফে হাজী সাইদুরের সাথে মোবাইলে যোযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে ডাকযোগে অভিযোগ প্রেরণের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি সর্বশেষ ৭০ সালে জমি ক্রয় করেছি। এর পরে আর জমি ক্রয় করিনি। হিন্দুরা কখনও এমন অভিযোগ করেনি। একটি চক্র ডাকযোগে বেনামী এসব চিঠি চালাচালি করছে বিভিন্ন দপ্তরে। বিষয়টি আমিও খোঁজখবর নিচ্ছি। যেসব অভিযোগে কোন সত্যতা নেই। তারপরও চক্রটি চিঠি চালাচালি অব্যাহত রেখেছে বলে তিনি জানান।