UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজধানীতে সন্তানের সামনে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা : আসামি মানিক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

usharalodesk
মে ২১, ২০২১ ৯:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে সাহিনুদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি মানিক র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাতে মিরপুরের ইষ্টার্ন হাউজিং এলাকায় র‌্যাব-৪ এর একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয় মানিক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার (২১ মে) সকালে র‌্যাব-৪ এর সিনিয়র এএসপি সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, গত ১৬ মে রাজধানীর পল্লবীতে নিজ সন্তানের সামনে স্থানীয় বেশ কিছু জমির মালিক সাহিনুদ্দীনকে সন্ত্রাসীরা চাপাতি, রামদাসহ বিভিন্ন ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
ওই ঘটনায় ১৭ মে নিহত সাহিনুদ্দীনের মা আকলিমা রাজধানী পল্লবী থানায় ২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
পরে র‌্যাব মামলার তিন আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান মো. আউয়াল, মো. হাসান ও জহিরুল ইসলাম বাবু।
সজল বলেন, গতরাতে আমাদের কাছে তথ্য আসে সাহিনুদ্দিন হত্যায় জড়িত মানিকসহ কয়েকজন ঢাকা থেকে পালানোর জন্য মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় অবস্থান নেয়। র‌্যাব-৪ এর দল সেখানে অভিযানে যায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোড়ে মানিকসহ তার সঙ্গীরা। র‌্যাবও গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে মানিকের মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল অস্ত্র-গুলি ছাড়াও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি সিনিয়র এএসপি সজলের।
হত্যাকাণ্ডটি পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে সংঘটিত হয়। ঘটনা শেষে হত্যাকারী সুমন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক সংসদ সদস্য আউয়ালকে মোবাইলে ফোন করে বলে, ‘স্যার ফিনিশ’।
সাহিনুদ্দিনকে হত্যার নির্মম দৃশ্য ধরা পড়ে পাশের একটি ক্যামেরায়। এতে দেখা যায়- দুই তরুণ দুই পাশ থেকে সাহিনুদ্দিনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাচ্ছেন। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর হামলাকারী একজন চলে যান। অপরজন সাহিনুদ্দিনের ঘাড়ে কোপাতে থাকেন মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত।
রাজধানীর পল্লবীর ডি–ব্লকের ৩১ নম্বর রোডে সংঘঠিত ওই রোমহর্ষ ঘটনার ৩১ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে যে দুজন হামলাকারীকে দেখা গেছে, তারা হলেন বন্দুকযুদ্ধে নিহত মানিক ও আরেকজন পলাতক মনির।
এর আগে ১১ মে আকলিমা পল্লবী থানায় সুমন বাহিনীর সুমনসহ ছয়জনকে আসামি করে জিডি করেন।
জিডিতে সুমন ছাড়া আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে হ্যাভিলি প্রপার্টিজের স্বত্বাধিকারী ও সাবেক এমপি এমএ আওয়ালও আছেন।
জিডিতে আকলিমা আশঙ্কা করেন, যে কোনো সময় তার ছেলে সাহিনুদ্দিনকে হত্যা করা হতে পারে। এই আশঙ্কার পাঁচদিনের মাথায় রোববার প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সুমন বাহিনীর সদস্য মনির ও মানিক রামদা দিয়ে সাহিনুদ্দিনকে একের পর এক কুপিয়ে যাচ্ছেন। আশপাশ থেকে ভেসে আসছে চিৎকার-কান্না। মাটিতে লুটিয়ে ছটফট করতে করতে বাঁচার আকুতি জানান সাহিনুদ্দিন। সাহিনের হাত-পা, গলা, মুখ, পেট, ঊরু, মাথা, হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলাপাতাড়ি কোপানো হয়। কিছুক্ষণ কুপিয়ে মানিক চলে গেলেও মনির কুপিয়ে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে গলায় কুপিয়ে কুপিয়ে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করার পর স্থান ত্যাগ করেন মনির।

(ঊষার আলো-এমএনএস)