ঊষার আলো রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। তিনি বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে যত টাকা লাগে আমি দেব। বিশ্বে যত নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তারা কিভাবে শিক্ষা দেয়, কী কারিকুলাম শেখায় সেই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা সে রকম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশে গড়ে তুলতে চাই। প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে তার কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই হস্তান্তরের মাধ্যমে ২০২৪ সালের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। সোমবার থেকে সারা দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।
‘নতুন বইয়ের ঘ্রাণ, নতুন বই পড়ে দেখা, এতে মলাট লাগানো এসবের আনন্দটাই আলাদা, বই পড়বে এবং বইয়ের যত্ন নেবে,’ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এছাড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রণালয়গুলো এ বছর ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি নতুন বই বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪০০ কোটি টাকা। দেশের প্রতিটি উপজেলায় ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তক পাঠানো হয়েছে।
২০১৭ সাল থেকে সরকার সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর শিশুদের তাদের মাতৃভাষায় অধ্যয়নের জন্য চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো এবং সাদরি ভাষার বই বিতরণের পাশাপাশি অন্ধ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশটা যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। সেজন্য আমাদের কারিকুলামগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার জীবনের একটি স্বপ্ন ছিল তিনি একজন শিক্ষক হবেন। প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। কিন্তু ৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করতে না পারায় সে পথে হাঁটা হয়নি। সে সময় ৬ বছর প্রবাসে রিফিউজি জীবন কাটাতে বাধ্য হন তিনি এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা। সে সময় তাদের দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তার বাবাকে পাকিস্তানি শাসকরা বারবার কারারুদ্ধ করে রাখায়ও তাদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হয়েছে। ‘কিন্তু আমরা আমাদের পরিবারে লেখাপড়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই। আমাদের ছেলেমেয়েদেরও বলি শিক্ষা হচ্ছে সম্পদ। এটি এমন এক সম্পদ যা তোমাদের থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না, তাই বিদ্যা অর্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। তারা তাই করেছে এবং করছে,’ বলেন তিনি।
ঊষার আলো-এসএ