আরিফুর রহমান (বাগেরহাট) : সেবা যত্নসহ বৃদ্ধকালে দেখ ভালের কথা বলে দানমুলে মায়ের সকল সম্পত্তি নিজ নামে দলিল করে নিয়েছে বাগেরহাটের রাধাভল্লব গ্রামের মিঠুন কুমার পাল নামের এক ছেলে।
একমাত্র বোনকে ঠকিয়ে মায়ের সম্পত্তি লিখে নেয়ার পর নানা অত্যাচার ও প্ররোচনা দিয়ে সেই মাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে মিঠুন পাল ও তার পরিবার। আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে এমন সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করে এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিয়েছে বোন রিংকু পাল। মিঠুন কুমার পাল নিজে একজন চিকিৎসক হয়ে তা গোপন করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কৃষক পরিচয়ে টিন নম্বর না দিয়ে একদিনেই পৃথক ৩ টি দানের ঘোষনাপত্রে প্রায় ৮ একর জমি দলিল করে নেন।
আর মায়ের এ জমি নেয়ার দলিলে ভাই-বোন ও আপন দুই মামলাসহ নিকট আত্মীয়দের জানায়নি। সম্পুর্ন প্রতারনা করে মায়ের ক্রয়কৃত অসংখ্য দাগ খতিয়ানের এ জমি ২০১৫ সালে দলিল করে নিয়ে গোপণ রাখেন।
ক্ষতিগ্রস্থ বাদীনী রিংকু পাল ও তার স্বামী ধ্রুব পাল জানান, প্রতারনা করে মায়ের সম্পত্তি লিখে নেয়ার ঘটনা জানাজানি হলে মিঠুন পালের সাথে মায়ের সর্ম্পকের অবনতি হয়। ফলে মাতা মিনু রানী পাল অত্যাচারিত হয়ে ২০২০ সালের জুন মাসে বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজার এলাকায় বাড়ীতে ঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে প্রচার পায়।
এক পর্যায়ে মিঠুন পাল সকলকে ম্যানেজ করে ২৪ জুন বাগেরহাট মুনিগঞ্জ মহাশ্মশানে মায়ের শবদাহ করে। শ্মশানের প্রনামী রশিদপত্রে এ মৃত্যুটি অপমৃত্যু বলে লেখা হয়। যার ক্রমিক নং-১২৯।
মায়ের অপমৃত্যু, প্রতারনা করে মায়ের সম্পত্তি নিজ নামে দলিল করে নেয়াসহ সার্বিক বিষয়ে আইনগত সহায়তা পেতে আমরা আইনজীবির মাধ্যমে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। এর আগে আমাদের আইনজীবির মাধ্যমে মায়ের অপমৃত্যুর জন্য এবং সম্পত্তি প্রতারনা করার বিষয়ে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা কেন করা হবে না মর্মে মিঠুন কুমার পালকে উকিল নোটিশ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বাগেরহাট যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে ২৯/২১ নং দেওয়ানী মামলা করা হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এ মামলার বাদীনির নালিশি অভিযোগ ও বিবাদীদের বক্তব্য শ্রবন শেষে মামলা চলমান অবস্থায় নালিশি সম্পত্তি হস্তান্তর বা অন্যত্র না করার জন্য বিধি-নিষেধ করেছেন।
অপরদিকে বিবাদিরা মামলা বাদী স্বাক্ষীদের বিভিন্নভাবে হুমকী-ধামকী দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে মিঠুন কুমার পালের পক্ষে তার আইনজীবি রিংকু পালের নালিশি অভিযোগ যথাযত না বলে অভিযোগ খারিজ করার জন্য আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের সদয় অবগতি চেয়েছেন।
(ঊষার আলো-এফএসপি)