বিমল সাহা : টাকায় কি’না সম্ভব? খাস জমিতে ব্যবসা করা, বিদ্যুতের মিটার নেওয়া-সবই সম্ভব। এমনটি ঘটেছে নগরীর গল্লামারীতে। ব্রীজের পশ্চিম পাশে সরকারী খাস জমিতে মাংস বিক্রি করেন শাহাবুদ্দিন। বিদ্যুতের প্রয়োজনে তিনি একটি মিটার সংযোগ নিয়েছেন। মিটারটি স্থাপন করেছেন পাশের একটি মার্কেটের খুটিতে। তিনি কিভাবে এই মিটার সংযোগ পেলেন? আর বিদ্যুৎ বিভাগ কিভাবে কাগজপত্র ছাড়া খাস জমিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলেন? এমন প্রশ্ন ওই এলাকার সকলের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গল্লামারী ব্রীজের পাশে সরকারি খাস জমিতে একটি মাংসের দোকান। এই দোকানে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে ইনসান সুপার মার্কেটের একটি খুটিতে স্থাপন করা মিটার থেকে। মিটারের গায়ে কালো কালি দিয়ে লেখা ‘শাহাবুদ্দিন ব্রীজ এর গোড়ায় কসাই’। প্রিপেইড মিটারের মডেল নং ডিডিজেড ১৫১৩, মিটার নং-৫০২৫০১২৫৪৬৪। মার্কেটের মালিক রকিবুল জাহিদ মুকল এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন কিভাবে একটি খাস জমিতে মিটার দিল এটাই আমার মাথায় ঢোকে না। একজনের মিটার থেকে অন্য জমিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যায় না। অথচ অবৈধভাবে একটি মিটার আমাদের মার্কেটের খুটিতে স্থাপন করা হয়েছে। আবার সেখান থেকে অন্য জায়গায় সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমার জমিতে মিটার লাগানো হলো অথচ আমি জানি না।’
গত ৯ জুন বুধবার তিনি ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিঃ এর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাতে তিনি ৫৯৮ ইনসান সুপার মার্কেটে একটি অবৈধ মিটার স্থাপন করা হয়েছে, অবৈধ মিটার সংযোগটি দ্রুত সময়ে বিচ্ছিন্ন করার অনুরোধ করেছেন। অভিযোগের পাঁচ দিন অতিক্রম হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি ওজোপাডিকো।
সাধারণত একটি মিটার সংযোগ নিতে গেলে জমির বৈধ কাগজপত্র, জমির মালিকের ভোটার আইটি, ছবি ও আনুসাঙ্গিক কাগজপত্রসহ আবেদন দিতে হয়। এরপর বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন সরেজমিনের গিয়ে সব দেখার পর সঠিক থাকলেই মিটার সংযোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিয়মের কোন তোয়াক্কা করেননি ওজোপাডিকো’র কর্মকর্তারা।
প্রিপেইড মিটারের বিদ্যমান দুর্নীতি প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটি খুলনার আহবায়ক ডাঃ শেখ বাহারুল আলম বলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে যদি ওজোপাডিকো সংযোগ দেয় তবে তা এমনি এমনি দেয়নি। নিশ্চই আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে এই সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু সংযোগ নয় নানা কায়দায় জনগণের টাকা অবৈধভাবে লুটপাট করছে ওজোপাডিকো’র কতিপয় কর্মকর্তা।
ওজোপাডিকো’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, এটা বহু আগে কে কিভাবে মিটার দিয়েছে জানা নেই। যারা মিটার দিয়েছে তারা কাগজপত্র সঠিকভাবে হয়তো যাচাই করে নি। অনেক সময় সকলের কাগজপত্র যাচাই করাও সম্ভব হয় না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানানো হবে।
অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, কে কখন অভিযোগ করেছে? অভিযোগের বিষয়টি জানানোর পর তিনি ক্ষতিয়ে দেখবেন বলে জানান।