UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সেতুর জন্য ৫২ বছরের অপেক্ষা

usharalodesk
মার্চ ২৮, ২০২৩ ৫:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইল সদর উপজেলার সরশপুর এলাকাবাসীর মরা চিত্রা খাল পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। ৫২ বছর ধরে একটি পাকা সেতুর অভাবে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এখানকার চার ইউনিয়নের প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। বর্ষা এলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। ঝড়বৃষ্টিতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে সাঁকো পারাপার।

স্থানীয়রা এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। দাবি পূরণ না হওয়ায় স্কুলশিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এছাড়া কৃষিপণ্য আনা-নেওয়াতেও পোহাতে হয় দুর্ভোগ। বছরের পর বছর ধরে একটি ব্রিজের অপেক্ষা এলাকবাসীর।

জানা গেছে, মরা চিত্রা নামের এ খালের উৎপত্তি মাগুরার শালিখা উপজেলার গড়েরহাট মোড়ে কাজলা নদী থেকে। পরে সেটি নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ও শাহাবাদ ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সেখান থেকে চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের রতডাঙ্গা ত্রিমোহনীতে গিয়ে চিত্রা নদীতে মিশেছে এ মরা চিত্রা। এই খালের ওপর প্রায় ১০ ফুট পরপর দুটি করে বাঁশের খুঁটি। এমন ১৮ খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাঁশের সাঁকোটি। ধরার জন্য আড়াআড়িভাবে দুই পাশে দুটি বাঁশ বেঁধে রাখা হয়েছে।

নড়াইল সদর উপজেলার এই খালের দুই পাড়ে রয়েছে মাইজপাড়া ইউনিয়নের ছয়টি এবং শাহাবাদ ইউনিয়নের আটটি গ্রাম। রয়েছে মাইজপাড়া, সরশপুর, শাহাবাদ ও ধোন্দার মোড়ে চারটি হাটবাজার, একটি কলেজ, তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে ব্যবসায়ী, কৃষক, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে।

খালের পশ্চিম পাড়ের চরবিলা গ্রামের বাসিন্দা আবু তালেব মোল্যা আক্ষেপ করে বলেন, কত নেতারে বললাম, কতবার চেয়ারম্যানদের বলেছি। এখানে একটা পাকা সেতু বানিয়ে দিলে আমাদের কষ্ট কমে যায়। তারা শুধু বলে দেখতিছি। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে ৫২ বছর শুধু শুনেই গেলাম হবে কিন্তু ব্রিজ আর হলো না।

খালপাড়ের বাসিন্দা বৃদ্ধ হেমায়েত হোসেন বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এলাকার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই চলাচল করছি। খালের দুই পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়নের অনেক ছোঁয়া লেগেছে। বদলে গেছে এলাকার চিত্র। বদলায়নি কেবল আমাদের বাঁশের সাঁকোটি।

এই খালের পূর্ব পাড়ে সরশপুর এলাকায় রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল শিক্ষার্থী তাসনুভা খাতুন জানায়, নড়বড়ে এই সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেক সময় পা পিছলে পানিতে পড়ে যাই। আমাদের কথা বিবেচনা করে খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ হোক।

শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, এখানে সেতু নির্মাণে তাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। এত গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি তারা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু সেতু নির্মাণের মতো বরাদ্দ তাদের নেই। এখানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে সেতু নির্মাণ করতে হবে।

নড়াইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহির মেহেদী হাসান বলেন, ওই জায়গায় একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে।