ঊষার আলো রিপোর্ট : দীর্ঘদিন পানি সমস্যায় ভুগছেন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বস্ত করলেও ৫ বছরে স্থায়ী কোনো সমাধান মিলেনি। এমতাবস্থায় রমজানের সেহেরী ও ইফতারের সময় চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ১০ তলা বিশিষ্ট আবাসিক হলটির ১২শ শিক্ষার্থীর।
সরেজমিন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলটিতে মাঝেমধ্যেই ওয়াশরুমে পানি থাকে না, কখনো আবার খাবার পানি থাকে না। গোসলে গিয়ে আটকা পড়তে হয়, পানির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। আবার একটু পানির দেখা মিললেও হঠাৎ নাই হয়ে যায়। শুক্রবার নামাজের আগে পানি থাকবে না এটাই যেন এখানকার নিয়ম। এই রমজানেও ২-১ দিন পরপর সেহরি-ইফতারের সময় পানি থাকে না। শিক্ষার্থীরা ওয়াশরুম ও গোসল করার জন্য এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে ছুটছেন পানির জন্য। রোজায় যেসব ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা চলে তারা আরও বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বারবার হল প্রভোস্টের কাছে এ বিষয়ে সুরাহা চাইলে আশ্বাস দিয়েই শেষ। স্থায়ী সমাধান করেননি কেউ। গত ৩ মেয়াদে হলটির প্রভোস্টদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল হলের পানি সংকট সমাধান করা। তবে তাদের কেউ পানির সমস্যা সমাধানে কোন ভূমিকা রাখতে পারেননি।
জানা যায়, ২০১৩ সালে এইচ আকৃতির ১০ তলা এ হলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রথম দফায় ২ তলা ও ৫ তলা কাজ শেষে হলটি চালু করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ১০ তলার দুটি ব্লকই শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু পানি সরবরাহের লাইন ও রিজার্ভ ট্যাঙ্ক আগের মতোই থেকে যায়। ফলে সেই শুরু থেকেই হলে পানির সমস্যা।
২০১৯ সালে তৎকালিন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইছাক এবং পরবর্তী প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে পানির সমস্যা সমাধানের কথা বললেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন সময়ে ৪-৫ দিনও হলটিতে পানি না থাকার ঘটনা ঘটেছে। তখন ওয়াসা দিয়ে অল্প পরিমাণে পানি সরবরাহ করা হতো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। আর নির্বাহী প্রকৌশলী ওলীউল্লাহ বলেন, অনেক সময় পানি ছাড়তে এদিক সেদিক হলে একটু সমস্যা হয়, তাছাড়া বড় কোন সমস্যা নেই।
তবে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মাসুম বলেন, আমি তো নিয়মিত পাম্প ছাড়ার জন্য ওখানে যাচ্ছি, চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে এই হল আর টিএসসি’র মাঝে নতুন একটা রিজার্ভার স্থাপন ও পাম্প বসালে সমস্যাটা থাকবে না। তবে কবে কাজ০টি হবে এ প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি।
ঊষার আলো-এসএ