ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সঙ্গে হামাস যদি অবশিষ্ট ইসরাইলি বন্দিদের মুক্ত না করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের হুমকিও দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু এ সময় দাবি করে বলেন, ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফের উপস্থাপিত একটি কাঠামো মেনে নিয়েছে। যা ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তির সুযোগ তৈরি করবে এবং অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ৫০ দিনের জন্য বাড়াবে।
ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুনরায় বলছি, ইসরাইল এই পরিকল্পনা মেনে নিয়েছে। আমি এই পরিকল্পনা মেনে নিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত হামাস এটি প্রত্যাখ্যান করেছে’।
ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তবে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, রোববার (২ মার্চ) ইসরাইল গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে গোটা উপত্যকায় মানবিক সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। গাজাবাসী চলতি রমজানে ইফতার, এমনকি সেহরিও করতে পারছে না।
ইসরাইলের এহেন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বলেছে, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করা যুদ্ধাপরাধের শামিল।
হামাসের বিরুদ্ধে নতুন হুমকি
এদিকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জনকে জীবিত ও ৮ জনের মৃতদেহ ইসরাইলকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। এর বিনিময়ে ইসরাইল ২,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।
তবে হামাস স্পষ্ট করেছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে না। তারা চায় যুদ্ধবিরতির সব ধাপ সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হোক। যার মধ্যে রয়েছে- গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার ও যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি।
তবে নেতানিয়াহু গত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার হামাসকে হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, তার বাহিনী আবারও যুদ্ধ শুরু করতে পারে এবং গাজার জন্য ‘নরকের দরজা’ খুলে যাবে।
নেতানিয়াহু খোলাখুলিভাবে স্বীকার করেছেন যে, তিনি ক্ষুধাকে হামাসের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।
তার ভাষায়, ‘আমি একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাই, তাহলো- এখানে বিনামূল্যে খাবার থাকবে না’।
গাজার সর্বশেষ তথ্য
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, অব্যাহত ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮,৩৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১,১১,৭৮০ জন।
অন্যদিকে গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস (Government Media Office) তাদের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা অন্তত ৬১,৭০৯ জন বলে জানিয়েছে। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঊষার আলো-এসএ