UsharAlo logo
সোমবার, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

১০ বার এভারেস্ট জয়ী লাকপার জীবনের গল্প

ঊষার আলো ডেস্ক
জুলাই ২৭, ২০২৪ ৫:০৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

একটি চমকপ্রদ গল্প রয়েছে লাকপা শেরপার। এ পর্যন্ত ১০ বার জয় করেছেন মাউন্ট এভারেস্ট যা অন্য সব নারী অভিযাত্রীর চাইতে বেশি। কিন্তু এতো সাফল্যের পিছনে ব্যক্তিগত জীবনে এক ভয়ংকর গল্প রয়েছে তার।

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করলেও হেরেছিলেন নিজের সংসার জীবনের কাছে।২০০৪ সালে এভারেস্ট জয় করার সময় স্বামীর কাছে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিলেন এই সাহসী নারী।

নেপালে ১৯৭৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন লাকপা শেরপা। বাবা-মায়ের ১১ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন। তিনি এমন এক এলাকায় বড় হয়েছিলেন যেখানে নারীদের শিক্ষাকে তখন গুরুত্ব দেওয়া হত না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি পড়াশোনায় ভালো না হলেও পাহাড়ের সাথে খুব ভালো । ‘ বই পড়তে না পারলেও পাহাড়ের প্রকৃতি খুব ভালোভাবেই পড়তে পারেন তিনি।

লাকপা শেরপা বিয়ের আগেই গর্ভবতী হয়ে পড়লে তার জীবন কঠিন হয়ে আসে। যেহেতু তিনি বিবাহিত ছিলেন না তাই লজ্জায় তিনি বাড়িতে ফেরেননি।

পরবর্তীতে রোমানিয়ার এক পর্বতারোহীর সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০২ সালে তারা বিয়ে করেন। এখানেও কঠিন জীবনের মুখোমুখি হন তিনি। তার স্বামী তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে শুরু করে।

২০০৪ সালে বৈরী পরিবেশে এভারেস্ট জয়ের সময় তার স্বামী তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন। ওই সময়ে সে অচেতন হয়ে পড়েছিল এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।

যদিও সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তারপরেও সন্তানদের দিকে তাকিয়ে তিনি বেশ কয়েক বছর তার স্বামীর সঙ্গে ছিলেন। এরপর ২০১২ সালে তার স্বামী তাকে আহত করে হাসপাতালে পাঠালে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন লাকপা এবং ২০১৫ সালে বিচ্ছেদ হয় তাদের।

নেটফ্লিক্সে তাকে নিয়ে একটি সিনেমাও রয়েছে ‘মাউন্টেন কুইনঃ দ্যা সামিট অফ লাকমা শেরপা। ’ এই মুভিটি নিয়ে গর্ববোধ করেন লাকপা।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমি মানুষকে দেখাতে চাই নারীরাও পারে। ’

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো খুব সামান্য প্রশিক্ষণেই ১০ বার এভারেস্ট জয় করেছেন এই বিস্ময়কর নারী।

লাকপা শেরপার কাছে পর্বতে আরোহণ শুধুমাত্র একটি আবেগ নয় বরং এটি তাকে সুস্থ থাকতেও সাহায্য করে। লাকপা বলেন, ‘ আমার অন্ধকার (পিছনের জীবন) আমি পাহাড়ে রেখে যাই। ’

বর্তমানে আমেরিকায় একটি মুদি দোকানে কাজ করে তিন সন্তানকে লালন পালন করছেন এই মহিয়সী নারী। লাকপা তার সন্তানদের জীবন পরিবর্তনের জন্য কাজ করছেন। তার সন্তানরাও এমন মা পেয়ে গর্বিত।