ঊষার আলো ডেস্ক: দায়িত্বে আসার আগেই বাণিজ্যযুদ্ধে নেমেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথমদিনই তিনটি দেশের ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করতে চান তিনি।দেশ তিনটি হলো মেক্সিকো, কানাডা ও চীন। স্থানীয় সময় সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্র–থ সোশ্যালে এমনটাই বলেছেন ট্রাম্প। সিএনএন।
ট্র–থ পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘২০ জানুয়ারি প্রথম নির্বাহী আদেশে আমি মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব নথিতে স্বাক্ষর করব।’ এরপর আরেকটি পোস্টে ট্রাম্প জানান, তিনি মাদক চোরাচালান মোকাবিলায় ব্যর্থতার দায়ে আমদানি হওয়া চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
চীনের প্রতিও ক্ষোভ ঝেড়ে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর পরিমাণে ওষুধ, বিশেষ করে ফেন্টানাইল পাঠানোর বিষয়ে চীনের সঙ্গে অনেক আলোচনা করেছি কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।’
তিনি লিখেছেন, ‘যতক্ষণ না তারা থামছে, আমরা চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ ট্যাক্স (শুল্ক) আরোপ করব।’
ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসী ও মাদকের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তার এই পদক্ষেপগুলো বলবৎ থাকবে।
ট্রাম্প বলেন, মেক্সিকো ও কানাডা-দুই দেশেরই অবৈধ অভিবাসী সংক্রান্ত এই দীর্ঘদিনের সমস্যা সহজেই সমাধান করার পূর্ণ অধিকার ও ক্ষমতা রয়েছে। আমরা তাদের কাছে এই ক্ষমতা ব্যবহারের দাবি করছি এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা তা করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বড় মূল্য দিতে হবে। তবে শুল্ক আরোপের হুমকির পরপরই এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। চীন দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার বিশ্বাস, চীন-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা প্রকৃতপক্ষে পারস্পরিক লাভজনক।
তিনি আরও বলেন, ‘বাণিজ্যযুদ্ধের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; কোনো পক্ষই এতে বিজয় অর্জন করতে পারবে না। চীন সব সময় আলোচনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে প্রস্তুত, যদিও নিজের অধিকার রক্ষায় পিছ-পা হবে না চীন।’
বিবৃতিতে লিউ উল্লেখ করেছেন, গত বছর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর চীন ওষুধ পাচার বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-সম্পর্কিত মাদকবিরোধী আইন প্রয়োগে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা মার্কিন পক্ষকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কানাডার অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডর্গ ফোর্ডও।
তিনি বলেছেন, আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ‘কানাডা-মার্কিন উভয় শ্রমিকদের জন্যই ধ্বংসাÍক হবে।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, বাণিজ্যযুদ্ধ দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে এ ধরনের সংঘর্ষ বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তবে চীনের প্রতিক্রিয়ার পর এখন নজর দুই দেশের ভবিষ্যৎ আলোচনার দিকে। অনেকেই আশা করছেন, শিগগিরই সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
ঊষার আলো-এসএ