UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট আজ

usharalodesk
জুন ৩, ২০২১ ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় অধিবেশনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংসদে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করবেন তিনি। এটি মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর চলতি সংশোধিত বাজেটের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে ৬৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা শেষে আগামী ২৯ জুন অর্থ বিল ও ৩০ জুন বাজেট পাস হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের তৃতীয় বাজেট এটি। ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামের এবারের বাজেটটি প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয় ঘটিয়ে।
করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে কমসংখ্যক সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে দেশের ৫০তম বাজেট ঘোষণা করা হবে। যাঁরা উপস্থিত থাকবে তাঁদের মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে একটি করে আসন ফাঁকা রেখে আসন বিন্যাস করা হবে। যাঁরা শারীরিকভাবে অসুস্থ তাঁদের সংসদে আসতে নিষেধ করা হবে। বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত থাকবে না কোনো সাংবাদিক কিংবা বিশিষ্টজনরা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এবারের পুরো বাজেটটি এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে জীবন ও জীবিকা ২টিকেই সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাজেটে প্রান্তিক মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা যেমন থাকবে, তেমনি থাকছে নানা ছাড়। এসব ছাড় দেওয়া হচ্ছে বিনিয়োগ তথা কর্মসংস্থানকে চাঙ্গা করার জন্য। করোনাকালের এ বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্য খাত। পাশাপাশি কৃষি খাত, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা, দেশীয় শিল্প খাত, সামাজিক নিরাপত্তা এবং কভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে আগামী বাজেটে নতুন করে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এবং বিভাগীয় শহরের বাইরে হাসপাতাল-ক্লিনিক নির্মাণে বিনিয়োগ করলে ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হতে পারে। ২০৩১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ মিলবে। পাশাপাশি সরকারি সব হাসপাতালকে অত্যাধুনিক করা হবে। আইসিইউ, ভেন্টিলেটরসহ করোনা মোকাবেলার পর্যাপ্ত সামগ্রী কেনা হবে। এ ছাড়া নতুন দুই হাজার চিকিৎসক, ২ হাজার নার্স এবং ৭৩২ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। তাঁদের জন্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে।
আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের আকার বা ব্যয় ধরা হচ্ছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে বাজেটের আকার বাড়ছে ৩৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
আগামী বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে আয় বাড়ছে ১১ হাজার কোটি টাকা। মোট আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছরেও এনবিআরকে একই পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া রয়েছে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর থেকে আসবে ১৬ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তি ধরা হচ্ছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী বছরে বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হচ্ছে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। এডিপি এরই মধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) অনুমোদন করেছে।
বাজেটে অনুদান ব্যতীত ঘাটতির পরিমাণ ধরা হচ্ছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৬.২ শতাংশ। আর অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৬.১ শতাংশ।
অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ঋণ নেবে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। আর জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেবে ৩২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা। বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.২ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি ৫.৩ শতাংশের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
(ঊষার আলো- এম.এইচ)