আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : বাগেরহাটের পূর্ব-সুন্দরবনের মধ্যে বনবিভাগের একটি টহল ফাঁড়ির চারিপাশে এক সাথে তিনটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার অবস্থান করছে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়িতে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটা থেকে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত বিচরণ করে ওই বাঘ তিনটি।
এই টহল ফাঁড়িতে ৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারি দায়িত্বে রয়েছেন।
টহল ফাঁড়িতে কর্মরতদের বরাত দিয়ে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষরক (এসিএফ) মোহাম্মদ শামসুল আরেফীন শনিবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে জানান, সুন্দরবনের গহীণে সুপতি স্টেশনের কাছে চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ির অবস্থান। এই ফাঁড়িটির পাশে বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য। শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ করে দুটি বাঘ এক সাথে টহল ফাঁড়ির ভেতরের পুকুর পাড়ে চলে আসে। সেখানে এসে তারা ঘোরাঘুরি করতে থাকে। এ সময়ে ওই টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক শেখ তা লক্ষ্য করে অন্যদের ডেকে দেখায়। বাঘ দুটি পুকুরপাড়ে নিজেরা তাদের মত করে চলাফেরা করছিল।
বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিরা সবাই মিলে দূর থেকে তা দেখছিলেন। তারা এ সময়ে বাঘের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করেন। পরে ওই দুটি বাঘের সাথে আরও একটি নতুন বাঘ যোগ দেয়। সব মিলিয়ে টহল ফাঁড়িতে তিনটি বাঘকে দেখা যায়। এখন বাঘের প্রজনন মৌসুম। তাই তারা এক সাথে চলাচল করছে। এই টহল ফাঁড়ির আশেপাশে অসংখ্য বাঘের পায়ের ছাপের দেখা মিললেও স্বশরীরে বাঘের দেখা খুব একটা পাওয়া যায় না। অনেক বছর পর টহল ফাঁড়ির ভেতরে বাঘের দেখা মিলল।
শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত এই বাঘ তিনটি আর টহল ফাঁড়ির বাইরে বের হয়নি। দুপুরের দিকে বাঘ তিনটি নিজেরাই বনের গহীনে ফিরে গেছে।
বাঘ দেখে বনকর্মীরা বাঘের ভয়ে ফাঁড়ির ভেতরে অবরুদ্ধ ছিলেন বা ভয় পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনা সামনি বাঘ দেখলে ভয়তো কিছুটা লাগবে, তবে তারা কেউ অবরুদ্ধ ছিলেন না। বনকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ওই টহল ফাঁড়িতে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। বাঘগুলো যদি কোন হিংস্র আচরণ করত তাহলে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের বনের ভেতরে পাঠানোর চেষ্টা করত। বাঘগুলো শান্ত ও স্বাভাবিক আচরণ করায় বনকর্মীরা তাদের দৈনন্দিন বিচরণ ও জীবনাচারণ উপভোগ করেছে।