যশোর প্রতিনিধি : হারুন অর রশিদ নামে এক লম্পট জামাই নেশার টাকার জন্য শাশুড়িকে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে যশোর জেলার বেনাপোলের নারায়নপুর গ্রামে। মাছুরা বেগম (৩২) বেনাপোল পোর্ট থানার নারায়নপুর গ্রামের ফুল মোহাম্মাদের স্ত্রী এবং জামাই হারুন অর রশিদ একই গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে।
জানা যায় রোববার (২ মে) দুপুরের সময় বেনাপোলের নারায়নপুর গ্রামে শাশুড়ি মাছুরা খাতুনের কাছে নেশার টাকা দাবি করে জামাই হারুন অর রশীদ। টাকা দিতে অস্বীকার করলে শাশুড়ি মাছুরা খাতুনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বাড়ি থেকে ধান লুট করে নিয়ে যায়। মাছুরার চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় শার্শা উপজেলা (নাভারণ) হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
এদিকে নেশাখোর জামাই হারুন তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন মাছুরা। তবে হারুন এর সাথে মাছুরার মেয়ের সম্প্রতি তালাক হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি বেনাপোলে পোর্ট থানাকে অবহিত করেছে আহত মাছুরা বেগম।
স্থানীয় গ্রামবাসী বিল্লাল হোসেন বলেন, হারুন একজন নেশাগ্রস্থ। সে তার শাশুড়ির কাছে নেশার টাকা না পেয়ে শাশুড়িসহ ওই পরিবারের সকলকে প্রায় মারধর করে। নেশার টাকার জন্য তার স্ত্রী স্বপ্নাকে মারধর করত। দীর্ঘ দিন ধরে নির্যাতনের শিকার হয়েও স্বপ্না হারুনকে ভালো পথে ফেরানোর জন্য আপ্রান চেষ্টা করে আসছিল। শেষ পর্যন্ত মারধর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবশেষে গত ১৯ মার্চ স্বপ্না হারুনকে তালাক প্রদান করে।
হারুন এর সাবেক স্ত্রী স্বপ্না বলেন, প্রায় ১৫ বছর তাদের বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে তাদের একটি ১১ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। হারুন ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে। তাকে সু-পথে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। সে শনিবার আমার পিতার বাড়ি এসে আমার মায়ের কাছে নেশার টাকা চায়।
আমার মা বলে তোমার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমার মেয়ের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তোমাকে টাকা দিব কেন? এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে রোববার (২ মে) দুপুরের দিকে পুনরায় আমাদের বাড়ি এসে আমার মাকে কুপিয়ে মারাত্বক যখম করে। এরপর আমার ভাই মা ও বাবাকে মারধর করে বাড়ির ধান নিয়ে চলে যায়। আমি আমার গরু ছাগল বিক্রি করে বসবাসের জমি ক্রয় করার জন্য হারুন এর ভাই ইউনুছকে দুই লাখ টাকা দেই। সেই টাকা হারুন নিজে নিবে বলে তার ভাইকে জমি দিতে নিষেধ করে। আমি আমার টাকা অথবা জমি ফিরে পেতে চাই।
মাছুরার ভাই আলাউদ্দিন বলেন, হারুন আমাকে হত্যা করার হুমকি দেয়। সে মাঝে মধ্যে আমাকে মারধর করে। তার অত্যাচারে আমরা গ্রামে বসবাস করতে পারছি না। হারুন এর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার শশুর বাড়ির পরিবারের সদস্যদের মারতে গিয়েছিলাম। এসময় তার শাশুড়ি ঠেকাতে আসলে তার মাথায় আঘাত লাগে।
শার্শা উপজেলা (নাভারণ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাছুরা বেগম বলেন, আমাকে সে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমার মাথায় ডাক্তার ১৬টি সেলাই দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। থানায় গিয়েছিলাম রক্তাক্ত অবসস্থায়। থানার দারোগা বলেছে আগে চিকিৎসা নেন পরে মামলা নেয়া হবে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)