ঊষার আলো রিপোর্ট : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৪) নামে এক শিক্ষার্থীকে হাতুড়ি পেটা করে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনা জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ঔ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে যশোর-চৌগাছা সড়কের পাশে অংশীদারীতে ৪ শতক জমি কেনেন আব্দুল্লাহ আল মামুন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী মুজাহিদ হাসান। স্থানীয় ওমর ফারুকের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা দিয়ে জমি কিনলেও প্রায় তিন বছর পার হলেও জমিটি বুঝিয়ে পাননি তারা।
সেই জমিতে মামুন ফেন্ডস ফটোকপি নামে একটি দোকান দেন। দোকান দেওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদল মামুনের কাছে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অপারকতা প্রকাশ করলে সেই ফটোকপির দোকান ও জমি জোর করে দখল করার টেষ্টা করে। মামুন সেটি বাধা দিতে গেলে বৃহস্পতিবার রাতে বাদল ও তার সঙ্গে কিছু লোকজন নিয়ে মামুনকে হাতুড়িপেটা করে পালিয়ে যায়।
পরে শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্ধার করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, এর আগে ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে সন্ত্রাসী ও বিশৃঙ্খলামূলক কর্মকান্ডের অভিযোগে সাময়িক বহিস্কার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদলকে। সম্প্রতি তিনি স্বপদে বহাল হয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মামুন বলেন, দীর্ঘদিন জমি কিনলেও জমির মালিক ওমর ফারুক সেটি বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। তার পরেও সেই জমিতে একটি ফটোকপি দোকান দিয়েছি। এই ফটোকপির দোকান চালিয়ে আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি জানান, এই জমি দখল নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদল বিভিন্ন সময় আড়াই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না দিলে এই জমিতে উঠতে দিবেন না বলে হুমকি দেন বাদল। শেষমেশ কোন ব্যবস্থা না করতে পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করলে বিচারক জমিটিতে ১৪৪ ধারা জারি করে।
বিষয়টি বাদল জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে তার লোকজন নিয়ে রাতে দোকান ও জমি দখল করতে আসে। তাদের বাধা দিলে বাদলের নেতৃত্বে তারা হাতুড়ি দিয়ে আমাকে মেরে ফেলে যায়।
পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগ স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী পারভেজ হোসেন বলেন, বাদল কর্মচারী হলেও স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী। তার নামে অনেক অভিযোগ। হঠাৎ করেই একজন শিক্ষার্থীকে এভাবে মারধর করা খুবই জখন্য কাজ। বাদলের বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসীমূলক কাজে সাধারণ শিক্ষার্থী ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করছি।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক শারিউল ইসলাম বলেন, মামুনকে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করলেও বর্তমানে শঙ্কামুক্ত। তার মাথায় আঘাতের চিন্হ রয়েছে। বাম পায়েও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, ঘটনা শুনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দিলে বিষয়টা প্রশাসন খতিয়ে দেখবে। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল আলম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঊষার আলো-এসএ