ঊষার আলো রিপোর্ট : বহুল প্রত্যাশিত স্থাপনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যাত্রা শুরু হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় টোল দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি নিয়ে উঠেন। এ সময় তার গাড়িবহরে ২৫টি গাড়ি ছিল।
এসময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রীকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্রিফ করেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এরপর ছোটবোন শেখ রেহানসহ গাড়িবহর নিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চড়ে আগারগাঁওয়ে সমাবেশের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী।
এক্সপ্রেসওয়ে আজ উদ্বোধন হলেও আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এই সড়ক দিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেটে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট। যা যানজটের কারণে এখন প্রায় ১ ঘণ্টার মতো লাগে।
বিদেশি বিনিয়োগে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় পরিবহন খাতে এটাই প্রথম প্রকল্প।
সম্পূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ে অর্থাৎ তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত আগামী বছরের জুনে চালু করার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এক্সপ্রেসওয়ে যেই দূরত্বেই চলুক না কেন, প্রত্যেক গাড়িকে সমান টোল পরিশোধ করতে হবে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও হালকা ট্রাককে ৮০, বাস ও মিনিবাস ১৬০, মাঝারি ট্রাক ৩২০ এবং ভারী ট্রাক বা ট্রেইলরে ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। অর্থাৎ বিজয় সরণি থেকে উঠে মহাখালী নামলেও এই হারে টোল দিতে হবে। আবার বিমানবন্দর গেলেও টোলের হার একই থাকবে। এই হারে টোল আদায় করায় কতসংখ্যক গাড়ি এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করবে তা নিয়ে সংশয়ে আছেন সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে রাত ও ছুটির দিনগুলোতে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারকারী কম হবে বলে ধারণা তাদের। ছয়টি পয়েন্টে টোল আদায় করা হবে। পয়েন্টগুলো হচ্ছে- বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানীর দুটি, মহাখালী ও তেজগাঁও।
এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলে কিছু বিধিনিষেধ থাকছে। পথচারী, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ি এতে উঠতে পারবে না। চলাচল করতে পারবে চার চাকার গাড়ি। এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলা যাবে না।
প্রকল্প সূত্র জানায়, আগামী জুনের মধ্যে পুরো এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হবে। তখন বিমানবন্দরের কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কতুবপুর পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েতে যাতায়াত করা হবে। তখন এর দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ১৯.৭৩ কিলোমিটার। মূল এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার জন্য ৩১টি র্যাম্প থাকবে। এসব র্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৪৬.৭৩ কিলোমিটার। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে যানজট এড়িয়ে সহজেই নগরবাসী ঢাকার বাইরে যাতায়াত করতে পারবেন।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের ৫১ শতাংশ, চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫.৯৬ শতাংশ।
ঊষার আলো-এসএ